শিক্ষনীয় একটি গল্প সবাই পড়বেন আশা করছি

একদা এক ঘুঘু ও এক বাদুড় খুব ভালাে বন্ধু ছিল। একদিন দুই বন্ধু কোথাও ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিল। তারা নদী ও পাহাড়ের ওপর দিয়ে উড়ে চলল ও এক বড় জঙ্গলে এল। দুই বন্ধুই খুব ক্লান্ত। হয়ে গিয়েছিল। তাদের বসার ও বিশ্রাম নেওয়ার প্রয়ােজন হল । শীঘ্রই রাত হল এবং চারিদিকে অন্ধকার হয়ে গেল। ঝড় উঠল । প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হল। ঘুঘু ও বাদুড় আশ্রয় খোজা শুরু করল। তারা একটি শত বছরের পুরােনাে রেইনট্রি গাছের কাছে এল। ঐ গাছে একটি পেঁচার বাসা ছিল। ঘুঘু ও বাদুড় পেঁচার দরজায় ধাক্কা দিল। বুড়াে বদমেজাজী পৈচা দরজা খুলে দিল। ঘুঘু ও বাদুড় তাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য অনুরােধ জানাল। পেঁচা। অনিচ্ছকভাবে তাদেরকে ভেতরে যেতে দিল । পাখি দুটো ক্ষুধার্তও ছিল। তারা কিছু খাবার চাইল। স্বার্থপর পেঁচাটি খুশি ছিল না। যা হােক, সে তার খাবার তাদের সাথে ভাগ করে নিল । ঘুঘু এতই ক্লান্ত ছিল যে সে খুব কমই খেতে পারল । কিন্তু বাদুড়টি ছিল ধূর্ত। সে লােভীর মত সব খেয়ে ফেলল । আরও খাবার পাওয়ার আশায় সে পেঁচার প্রশংসা করতে লাগল । বাদুড় বলল, “হে জ্ঞানী ও সাহসী পেঁচা, আপনিই আমার দেখা , সবচেয়ে মহানুভব ব্যক্তি। আপনি ক্ষমতাধর ও শক্তিশালী।” বাদুড়ের চাটুকারিতায় পেঁচা খুবই খুশি হল। নিজেকে যতটা সম্ভব জ্ঞানী ও সাহসী দেখানাের জন্য সে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিতে লাগল এবং চুল/পালক ঠিক করতে লাগলাে। এবার সে
এবার সে ঘুঘুর দিকে ঘুরল এবং জিজ্ঞেস করল, আমার সম্পর্কে তােমার ধারণা কী?”
সারাক্ষণ ধরে ঘুঘু তার বন্ধুর মিথ্যা প্রশংসাগুলাে শুনছিল । সে অবাক হচ্ছিল কত কপট ও আন্তরিকতাহীন তার বান্ধবির প্রশংসা গুলো। ঘুঘু মাথা নিচু করল এবং চুপ থাকল । | পেঁচা অধৈর্য হয়ে পড়ল। সে আরও প্রশংসা শুনতে চাইলাে । সে ঘুঘুর দিকে তাকাল এবং জিজ্ঞেস করল, “তােমার কি | আমার সম্পর্কে ভালাে কিছু বলার নেই?” বাদুড় পেঁচার সাথে । যােগ দিল, “হ্যা, তােমার কি আমাদের অতিথি সেবককে প্রশংসা করার মত কোন কথা নেই?” ঘুঘু তার বন্ধু বাদুড়ের জন্য লজ্জিত হল এবং তার চোখ বন্ধ করল । পেঁচা ঘুঘুকে | তাড়া দিল, “এস, কিছু একটা বল! | | ঘুঘু তার মাথা ধীরে ধীরে তুলল এবং বলল, “গৃহকর্তা পেঁচা, আমাকে যে আশ্রয় দিয়েছেন তার জন্য অনেক ধন্যবাদ, আমাকে যে খাদ্য প্রদান করেছেন তার জন্য ধন্যবাদ। আমি এর জন্য চির কৃতজ্ঞ থাকব।
বাদুড় চিৎকার করে উঠল, “কি? এটাই কি সব যা কি সব যা আমাদের। উদার অতিথি সম্বন্ধে তােমার বলার আছে? তিনি কি ” তিনি কি সকল পশু-পাখীদের মাঝে জ্ঞানী, সাহসী ও সবচেয়ে মহান তার মহৎ চরিত্র এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহের জন্য তােমার কোন প্রশংসা নেই? আমি তােমার জন্য লজ্জিত। ভs | এই আতিথেয়তার যােগ্য নও। তুমি এই আশ্রয়ের যােগ নও।”
“তুমি এক অকৃতজ্ঞ পাখি, এবং বাদুড়ই ঠিক। এই উদারতা এই আতিথেয়তা যা আমি প্রদান করেছি, তুমি তার যােগ্য নও । দূর | হও! যাও, বলছি!” পেঁচা বলল। | “হ্যা, দুর হও!” বাদুড় তার চামড়ার ডানা ঝাপটে কণ্ঠ মেলাল। | এবং দুই নিষ্ঠুর জীব বেচারা ছােট্ট ঘুঘুর ওপর ঝাপিয়ে পড়ল। এবং অন্ধকার ঝড়ের রাতে তাকে বের করে দিল। | কিন্তু সেই পেঁচা ও বাদুড় তাদের হৃদয়হীনতার জন্য শাস্তি এড়াতে পারল না। বাদুড় দিনের আলােতে উড়তে পারে না । সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হয়। আর তােমরা কি জান সেই অহংকারী পেঁচার কী হয়েছিল? ভালই, সূর্য যতক্ষণ না ওঠে তাকে অন্ধ থাকতে হয়। যতক্ষণ না রাত হয়, সে শিকার করতে বা নিজের খাদ্য জোগাতে পারে না। তাই সেই দুই দুষ্টু পাখি তাদের অন্ধকার হৃদয় নিয়ে। অন্ধকারেই বাস করে। পক্ষান্তরে/অপরদিকে, ঘুঘুকে তার সত্যবাদীতার জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়েছে । যতদিন পৃথিবীতে প্রেমের পদ্য থাকবে, তার নাম কবিরা ব্যবহার করবে।

Related Posts

36 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.