“মৃত্যু” দিয়েই জীবনের ‘শেষ ঠিকানা’ রচিতঃ বাস্তব গল্প

সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম। আমরা জানি “মৃত্যু” শব্দটি সবার কাছেই অত্যন্ত দুঃখজনক ও বিধিবদ্ধ নিয়ম যা একটি অকল্পনীয় বা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। পৃথিবীতে যার জীবন আছে তার মৃত‍্যু অনিবার্য। পৃথিবীর কোন জীবই মৃত্যু থেকে পালায়ন করতে পারবে না। মহান আল্লাহর এ যেন এক অকাট্য দলিল বা বিধান যার কোন পরিবর্তন বা পরিবর্ধন নেই।

মৃত্যু থেকে বাঁচার শত চেষ্টা করলেও মৃত্যু কাউকে ছাড়বে না। কোন প্রকার অর্থ বা সম্পদের বিনিময়ে মৃত্যু থেকে পরিত্রান পাওয়া যায় না। যদি পরিত্রান পাওয়া যেত তাহলে মানুষ তার সর্বস্ব সবকিছুর বিনিময়ে বেঁচে থাকার বৈধ সনদপত্র বা সার্টিফিকেট অর্জন করতো। আর পৃথিবীর রাজা বাদশা বা সম্পদশালীরা সর্বপ্রথম সার্টিফিকেট টি সংগ্রহ করে অনন্তকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকার নিশ্চিয়তাকে বাস্তবায়ন করতো। কিন্তু  এই সুকঠিন অসম্ভব বাস্তবতা কে বাস্তবায়ন করা সকলের পক্ষে সত্যিই অসম্ভব।

মানুষ হাজারো আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পৃথিবীতে জীবন যাপন করে। জীবন ধারনের সকল উপকরণও জোগাড় করে। অনেকে কখনো চিন্তাও করে না সর্বোচ্চ জীবন উপকরণও জীবনকে রক্ষা করতে পারবে না। কিন্তু মানুষ এসব জীবন উপকরণ সংগ্রহ করে তার আশা আকাঙ্ক্ষা বা স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন‍্য।

মানুষ যদি মৃত্যুর স্বরণকে  জীবন ধারনের একটি উপকরন বা অবলম্বন বানাতো তাহলে এসব উচ্চ আশা-আকাঙ্খার জীবন্ত দাফন এই পৃথিবীতেই হয়ে যেত। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে অধিকাংশ মানুষ মৃত্যুর স্বরন থেকে নিজেকে পিছিয়ে রেখে স্বপ্ন পূরণে মরিয়া হয়ে এই পৃথিবীর রঙমঞ্চে মেতে উঠেছে। মনে রাখবে তুমি মৃত্যু কে ভুলে গেলেও মৃত্যু তোমাকে ভুলবেনা। আমার জীবন থেকে প্রতিটি সেকেন্ড চলে যাচ্ছে তো আমি মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়েছি।আমরা অনেক সময় গর্ব করে বলি যে আমি অনেক বড় হয়েছি, আমার বয়স হয়েছে কিন্তু আসল বাস্তবতা হলো আমার পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার সময় হয়ে যাচ্ছে।

একখন্ড বরফকে আমাদের পৃথিবীর পরিবেশে রেখে দিলে পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রার প্রভাবে ওই বরফখণ্ড একসময় তরল পানিতে পরিণত হয় ঠিক তেমনি ভাবে মহান আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত আমার  হায়াত ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

প্রতিটা সেকেন্ড, প্রতিটা মিনিট,প্রতিটা ঘন্টা,প্রতিটি দিন  আমার জীবন থেকে চলে যাচ্ছে তো আমার হায়াত শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি কবরের বাসিন্দা হয়ে কবরের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছি। কিন্তু আমাদের অবুঝ মন তা বুঝতে চায় না। এই অবুঝ মন যখন বুঝবান হয়  তখনই আমাদের আল্লাহর স্মরণ হয়। আল্লাহর ইবাদতে নিজেকে নিমগ্ন রাখতে সচেষ্ট হয়। মৃত্যুকে স্মরণ করলে দুনিয়াতে আশা-আকাঙ্ক্ষা ধীরে ধীরে কমে যাবে এবং পরকালের প্রতি আমাদের অনুরাগ সৃষ্টি হবে। দুনিয়াতে থাকা কালিন সময়ে আমাদের দ্বারা বিভিন্ন অন্যায় ও পাপ কাজ কম হবে।

মনে রাখবে মৃত্যু শব্দটির মধ্য দিয়েই তোমার জীবনের সকল আশা -ভরসা,উন্নতি-অবণতি শেষ হয়ে যাবে।দুনিয়াতে যতদিন ছিলে ঠিক ততদিনেরই তোমার সমস্ত স্মৃতি ইতিহাস হয়ে দুনিয়াতেই রয়ে যাবে। আর তুমি ও তোমার দেহ চলে যাবে পরকালে মহান আল্লাহর কাছে। আর পরকালের জীবনই তো সর্বোত্তম জীবন। যে জীবনের শুরু আছে কিন্তু  কোনদিনও  শেষ হবে না।

এজন্য আমাদের উচিত ইহকালে দুনিয়ার প্রতি লোভ-লালসা ত্যাগ করে পরকালের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার চেষ্টা করা।

তাহলে আমাদের জীবন বরকতময় হবে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন।

আমীন।।

Related Posts

18 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.