বিবাহ বার্ষিকী ইসলামিক শুভেচ্ছা

বিবাহ বার্ষিকী ইসলামিক শুভেচ্ছা
মুহা.কবির হোসেন

‘বিবাহ বার্ষিকী ইসলামিক শুভেচ্ছা’জীবনের পরম আকর্ষণীয় ও বিশেষ শৌখিনতার অবিচ্ছেদ্য একটা অংশ হিসেবে বিবেচিত। জঙ্গলাকৃতির এপৃথিবী,সৃষ্টির চির সুন্দর সেরা জীব মানুষ নামের ফুল দিয়ে সুসজ্জিত। মহা মহিমান্বিত রাব্বুল আলামিন,বিশেষ কৌশল ও পরম দয়ার মাধ্যমে মানব জাতিকে সৃষ্টি করেন।আল্লাহর পছন্দ নয় এ জাতি সত্তা সৃষ্টির বিভিন্ন কলা কৌশল বা, প্রক্রিয়া হতে পারতো – কিন্তু তিনি একবারই সৃষ্টি করলেন মানব জাতির ‘রুহ’!ও তাঁর ক্রমবিকাশ’র তথা উন্নয়ন আর সুপ্রজননের জন্য চিরাচরিত একটি বিশেষ প্রক্রিয়া অবলম্বন করলেন, নারী ও পুরুষের পরস্পরের মধ্য নিরন্তর দাম্পত্য জীবন সম্পর্কের,যার নাম নিকাহ বা, বিবাহ বন্ধন।

জগৎ জুড়ে থাকা মানব জাতির ক্রমবিকাশের সাথে সাথে অজস্র ধর্মীয় রীতি রেওয়াজ বিদ্যমান আছে। এবং পৃথিবীতে এখনও প্রায় সারে তিন হাজার ধর্ম ও ধর্মীয় কালচার এর তথ্য পাওয়া যায়, যেখানে সুস্পষ্ট ভাষায় নেকাহ বা, বিবাহ বলতে নারী পুরুষ এবং এর মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক প্রণয়নের সামাজিক বা, ধর্মীয় বৈধ আইনি চুক্তি ও তার স্বীকারোত্তি তথা এজাব ও কবুল এর মাধ্যমে সু সংগঠিত এ বন্ধন সৃষ্টি করে।ইসলামি সংবিধান পবিত্র আল-কোরআনে মানব জাতির স্রষ্টা তাঁর মানব পরিবারকে ডাক দিয়ে বলেন, হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর- যিনি তোমাদেরকে একই নফস আত্মা বা ‘রুহ’ থেকে সৃষ্টি করেছেন, এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন, আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী।

আর আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের উপর যাঞ্চা করে থাক এবং আত্মীয় জাতির ব্যাপারে সতর্ক অবলম্বন কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন। সূরা: নিসা ০১ ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে বিদ্যমান মানব চরিত্রের অনুপম সৌন্দর্য বৈবাহিক সম্পর্ক- খুশির অরণ্যে জীবন বসন্তের বর্ণাঢ্য এ এক অপূর্ব সাজ,যাতে পৃথিবী সুসজ্জিত। বৈচিত্র্যময় পৃথিবী!এ জীবনেরও বিচিত্র রূপ! স্বর্গ থেকে আসা এ জীবন!বৈচিত্র্যময় এ পৃথিবীতে খোঁজে কোথায় আছে কি সুখ?
জন্মগত ভাবে মানুষ কৌতুহল প্রবণ। কৌতুহল প্রবণতা যার স্বভাব জাত বৈশিষ্ট্য সে মানুষের জীবনে আকর্ষণীয় একটি দিন দৃষ্টান্তমূলক ভাবে পালন করা অদম্য ইচ্ছা ও উৎসুকতা যে কারোরই হওয়ার কথা এবং হতে পারে- চাই সেটা জন্ম বার্ষিকী হোক, বিবাহ বার্ষিকী হোক আর মৃত্যু বার্ষিকী হোক, যা ই হোক না কেন,যে জীবনের দায়বদ্ধতা রয়েছে ধর্মীয় অনুশাসন কিবা সামাজিক ও ধর্মীয় নীতি আদর্শের কাছে, সে জীবনের সুখ,শোক বলতে যাবতীয় জীবন ব্যবস্থাপনাই পরম আদর্শ- সত্য সুন্দর ও মঙ্গল এর যৌক্তিকতা ও স্বরূপ বিচার করে পালন করা অতীব জরুরী।

কারণ মানুষের তকমায় মানুষের মধ্য থেকেই কিছু মানুষ গোলাপের মত সুগন্ধি ছড়ায় আর চুম্বকের চেয়েও আকর্ষণ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে আশ পাশের মানব মনকে পরশের মত পরশিত ও আকর্ষণ করে অমরত্ব লাভ করেন।দৃশ্যত ফুল বাগানে হরেক রঙের ফুল ফোটে কেউ গোলাপ হয়ে ফোটে মানুষের মন ও মননে সুগন্ধির সাথে লেগে থাকে কেউ বা আবার ফোটে আর ঝরে সুগন্ধহীন অগৌরবে,সব গুলো ফুলই ফুল তবুও ফুলে ফুলে রয়ে যায় বিরাট তফাৎ।
মানুষের মধ্যেও ঠিক অনুরূপ ভাবে সুগন্ধিবিহীন ফুলের মত ফোটে কল্পিত দৃশ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে অনন্ত ভবিষ্যতের সেতু পারাবার পথ ভোলা হয়ে জীবনডাটা থেকে দেহটা নিষ্প্রাণ হয়ে মৃত্যুতে ঝরে পড়ে।তাই সব মানুষ ই মানুষ কিন্তু মাপকাঠির বিচারে সবার হিসেব এক নয় বরং একটু ভিন্নতা আছে আর থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ যারা মহান সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে বিশেষভাবে মদদ প্রাপ্ত রাহনাময়ীর দায়িত্ব প্রাপ্ত- বিশ্ব মানব সম্প্রদায়ের পথ প্রদর্শক নবী- আম্বিয়ায়ে কেরাম আঃ,মহা মনীষী, জ্ঞানী, গুণী, সমাজ সংস্কারক, রাজনীতিবিদ তাদের জীবন আদর্শ থেকে সমগ্র মানুষের জন্য যে আলো বিচ্ছুরিত হয়, যেহেতু তারা সৃষ্টিকর্তার সীমাহীন সৃষ্টি রহস্য ও সৃষ্টি জগতের উপর চিন্তা ভাবনা ও গবেষণা করে তার মহত্ত্ব ও কুদরত সম্পর্কে অবগত হয়ে মহৎ উচ্চ পর্যায় শান সওগাত অর্জন করেন এবং তাঁর পরশে মানুষকে শোভিত ও মহিমান্বিত করেন।

মানুষ তাদের জীবনাদর্শ থেকে যে পথ ও পাথেয় এবং শিক্ষা লাভ করতে সক্ষম হয় অন্য সব আম জনতার বেলায় এমনটা আশা করা যায় না। তাই, জন্ম দিবস, ওফাত দিবস বা মৃত্যুবার্ষিকী,বিবাহ বার্ষিকীও আম ভাবে গুরুত্ব দেওয়ার সুস্পষ্ট বিধি নিষেধ খুঁজে পাওয়া দূরহ ব্যপার। তবে ব্যক্তি বিশেষে অনুমতি সাপেক্ষে হীন-ক্ষীণভাবে যতটুকু পাওয়া যাবে তাতে ইসলামি শরীয়তের অনুকুল পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত থেকে নফল বৈকি ফরজ,ওয়াজিব বা অত্যাবশ্যক বলে এ দিন গুলো উদযাপন করা শোভনিয় নয় এমনটাই উপনীত হওয়া যায় ।পার্থিব এ জীবনের আনন্দ কতটাই বা, শরিয়ত সম্মত এবং দীর্ঘস্থায়ী? জীবনের আনন্দ ক্ষণস্থায়ী না হলে কেনই বা দুঃখ নেমে আসে? জীবনের অর্থ ই হলো দায়িত্ব -কর্তব্য ও অবিরাম পরিবর্তনশীল এক যাত্রাপথ পরিক্রমার পথিক- মুসাফির। দৃশ্যত দেখা যায় ইব্রাহিম আদহাম এর মত শাহানশাহী ছেড়ে ভালোবাসার উজাড় হৃদয় প্রেমের উষ্ণ অনলে ফানাফিল্লের জগতে বিরাজ করে কেউ বা আবার সাদ্দাত এর মত কামনার বাসনা নিয়ে প্রেম শম্পাওয়ালা স্বর্গবালা খানা তৈরি করে কামনার সে অতৃপ্ত তৃষ্ণায় ওষ্ঠাগত হয়েই অনন্তের দুয়ারে হাজির হয়। তাই সামগ্রিকভাবে বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন এর স্বীকৃতি থাকলে ধর্মের উপর উপকার অপেক্ষা ক্ষতিকর আশঙ্কা তথা বেদায়াতে ছাইয়া বা, নিকৃষ্টতর
কালচারে সৃষ্টি হওয়া অসম্ভব কিছু নয়।

তবে ঈসা আঃ এর মা’য়ের ব্যপারে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের লোকেরা যখন সন্দেহ প্রকাশ করলো যে,ঈসা আঃ এর মা মরিয়ম এর বিবাহ হয়নি তো ঈসা- ছেলে আসলো কোথা থেকে তখন মা’য়ের কোলে দোলা শিশু ঈসা আঃ এর মুখ থেকে আল্লাহর কুদরতে অহি পাঠ করে শুনিয়েছিলেন “অসসালামু আলাইহি ইয়াওমা উলিদা ওইয়াওমা ইয়ামুতু ওইয়াওমা ইউবয়াসু হাইয়া।”অর্থাৎ যখন আমি জন্ম হয়েছি ওই দিনের উপর সালাম,আর যখন ওফাত বরণ করব সেদিনের উপর সালাম এবং যখন পুনরায় জীবিত হবো সেদিনের উপর ও সালাম। (সূরা-মারিয়াম ১৫) এবং রাসুল সঃ এর জন্ম দিন, হিজরত, ও তাঁর মৃত্যু দিনকে কেন্দ্র করে সাহাবায়ে আজমায়ীনদের আমল থেকে প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আনাস রাঃ এর মত অনেক সাহাবী তাদের জীবনের চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ মনে করে ওই দিন গুলো পালন করেছেন আর এখনও মুসলিম উম্মাহর মধ্যেও লক্ষ করা যায়। আবার রাষ্ট্রীয়ভাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষেত্রে যে দিন গুলো পালন করা হয়ে থাকে তা মূলত দেশ ও জনপদবাসীর মধ্য সেদিন গুলো বিশেষ এক শক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্যই। যদি আমভাবে এ দিন গুলোর বিশেষত্ব থেকে থাকে ও গুরুত্বারোপ করে পালন করতে হয় তবে নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টি ছয় দিনের অর্থাৎ দু’দিনে ভূমণ্ডল, দু’দিনে ভূমন্ডলের পাহাড় পর্বত বৃক্ষ,উদ্ভিদ এবং মনুষ ও জন্তু জানোয়ার,পানাহারের বস্তু সামগ্রী সৃষ্টি করা হয়েছে। যে দু’দিন ভূমণ্ডল সৃষ্টি করা হয়েছে তা ছিলো রবিবার ও সোমবার।দ্বিতীয় দু’দিন ছিলো মঙ্গল ও বুধবার যাতে ভূমণ্ডলের সাজ সরঞ্জাম পাহাড় নদী ইত্যাদি সৃষ্টি করা হয়,অতপর সাত আসমান সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার, এ দিনগুলো গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পরেও কেন উদযাপন করা হয় না? দৃশ্যত মুসলিমদের ধর্মীয় ছোট একটা ঈদের মতোই পবিত্র শুক্রবার জুমার নামাজের এ দিনে প্রতিও মুসলমানদের শতভাগ শৌখিনতা লক্ষ করা যায় না। যাতে সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভে তাঁর জন্য একটা সেজদা অপেক্ষা অধিকতর প্রিয় এবাদত আর কিছু নেই। যে সেজদা অস্বীকার করে বেহেশতে থাকা ফেরেশতাদের শিক্ষক আজাজিল, ইবলিশ শয়তানে পরিণত হয়ে বেহেশত থেকে পদস্খলন ঘটেছিল।

তবুও সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সেজদাকে অস্বীকার না করলেও ধর্মীয় লেবাস সূরতের অন্তরালে পার্থিব আনন্দ উন্মাদনায় উন্মত্ত।তিক্ত হলেও সত্য যে, অনেক স্বামী ই তাঁর বিবাহিত স্ত্রীর ‘মোহর’ যা অবশ্য পরিশোধ্য এক বিশেষ ঋণ।স্ত্রীকে অসহায় মনে করে- নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে ছলেবলে মাফ করিয়ে নেয়,এই ভেবে যে মৌখিকভাবে যখন স্বীকার করিয়ে নেওয়া গেছে তা তো মাফ হয়েছে।
এ ধরণের জুলুম প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে পবিত্র কুরআন হুশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে- নারীদের তাদের মোহরানার অংশ তাদের স্বীয় মালিকানায় দিয়ে দাও,
অতঃপর তারা যদি স্ত্রী নিজের থেকে স্বতঃস্ফুর্ত মনে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মোহরের কোন অংশ ক্ষমা করে দেয় তবেই তোমরা হৃষ্ট মনে উপভোগ করতে পার। সূরা নিসা – ৪
চাপ প্রয়োগ করে ছলেবলে জোর জবরদস্তি করে মৌখিকভাবে মাফ করিয়ে নেওয়া কোন অবস্থাতেই ক্ষমা বা তাঁর থেকে মোহরের ঋণ মুক্ত হওয়া নয়। তদুপরি এভাবে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়েও অতি উৎসাহী ও উৎসুক মনে সাম্প্রতিক সময়ে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে কম বেশী ম্যারেজ -ডে বা বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করে থাকে। ধর্মীয় অনুভূতি হারিয়ে এহেন শৌখিনতা পরোক্ষভাবে হলেও সংসার সমরাঙ্গনের মাঝে সুখবীনে দুঃখ আসে এমন দৃষ্টতাও লোক চক্ষুর অন্তরালে সমাজে বিদ্যমান রয়েছে।
কারণ, “যে জিনিস যতবেশি লোভনীয় ও মোহনীয় তার প্রতি মানুষের আকর্ষণ ক্ষুধার্ত বাঘের শিকারের আকর্ষণ অপেক্ষা অধিকতর তীব্র হয়ে থাকে”।

আর “নারী পুরুষ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম গুলো থেকে সাধারণত শিকারীর গন্ধই পাওয়া যায়”।
সমকামীতা, ইভটিজিং, নারী ও শিশুধর্ষণ এমন কী ধর্ষণের পর পৈশাচিক ও নির্মমভাবে হত্যার জাহেলীপনা থেকে যে সমাজ আজও উঠে দাঁড়াতে পারেনি ! অজস্র কলঙ্কের বোঝা বহন করে,যে সমাজে বিষ খেয়েও কেউ দুধ দেয়, দুধ খেয়ে উগলায় বিষ! সে সমাজ আনন্দ উল্লাস উপভোগ করার বৈধতা পেলে কতটা যে ভয়ংকর রূপ ধারণ করত সামান্য জ্ঞানে যে কেউই তা বুঝতে সক্ষম। প্রকৃত প্রস্তাবে, একজন প্রকৃত ধর্মপ্রাণ ও খোদাপ্রেমীর জীবনাদর্শ এমনটা নয় যে, পার্থিব এ পান্থশালায় প্রত্যুষে জেগে সন্ধ্যাকে প্রত্যক্ষ করার কামনা করেন। তারা ”ক্ষণজন্মা এ দুনিয়াকে অনন্ত জীবনের শস্যক্ষেত” মনে করে জীবনের একটা মুহূর্তও পার্থিব রঙ তামাসা ও আনন্দ উল্লাসে বিলিয়ে না দিয়ে বরং জ্ঞান ও হেকমত দিয়ে ইবাদতের মাধ্যমে তারি এ দুনিয়া আবাদ করেন। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য হলো তারা তাদের জীবনের প্রতিটি মুহুর্তকে জীবনের শেষ দিন মনে করে-তার মধ্যে স্রষ্টাকে উপস্থিত দেখতে পান। জ্ঞানের জগৎ ও ভাবের জগতে তারা ব্যক্তি পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রকে কুসংস্কার ও ফাসাদ মুক্ত শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে প্রশান্ত চিত্তে নিজেকে ব্রত রাখেন।

আর প্রশান্ত চিত্ত মানুষের উপহার কী? প্রশান্ত চিত্তের উপহার সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে শুভেচ্ছা বাণী স্বরূপ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন -যে ব্যক্তি প্রশান্ত চিত্তে সুস্থ শরীর ও দিবসের খাবার জোগাড় করে খেয়ে, রাত কাটাল সে যেন ঘোটা দুনিয়ার মালিক। সূরা কাসাস ২১।
এ শ্রেণীর মানুষ সাধরণের মধ্য থেকে অসাধারণ শাহানশাহী জীবন যাপন করে নিজেকে যেমন নিরাপদ রাখতে সচেষ্ট হন তেমনি ভাবে সমাজকেও নিরাপত্তার চাদর বিছিয়ে দেন। তাদের দৃষ্টিতে সর্বোৎকৃষ্ট নিরাপত্তা কী? সর্বোৎকৃষ্ট নিরাপত্তা হলো আত্মার নিরাপত্তা। এবং আত্মার নিরাপত্তা বলতে বুঝায় ঈমান ও সত্যকে জানা।ঘরের নিরাপত্তা লজ্জা ও বিচ্যুতি হতে মুক্ত হওয়া এবং শান্তি ও স্বর্গীয় পথ নির্দেশে ভরপুর হওয়া। এবং আমাদের জাতীর নিরাপত্তা হলো ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। ন্যায়ের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ও শরীয়তের বাস্তবায়ন করা।

বিশেষত বিবাহ বার্ষিকী হলো স্মৃতিময় আনন্দ ঘন দাম্পত্য জীবনের বিশেষ একটি দিন।স্মৃতিময় স্বর্ণজ্জ্বল বর্ণিল এ দিনে বিবাহিত দম্পতিরা তাদের বিবাহের সময়ের সমস্ত আনন্দের মুহূর্ত গুলোকে নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি নিয়ে আরো নতুন নতুন আনন্দের স্মৃতি তৈরী করেতে উদ্বুদ্ধ হন। এবং চমকপ্রদ খুশির আয়োজন করেন। কেননা বিবাহ বার্ষিকীর দিনটি দম্পতি ও তাদের পরিবারের কাছেও একটি বিশেষ খুশির দিন।এদিনে শুধু দুটি মনের মিলন হয়নি বরং মিলন হয়েছিল দুটি পরিবারে জীবনে নিত্য-অনিত্য অসংখ্য আনন্দ ঘন মুহূর্ত আসে।

তবে দম্পতিরদের জীবনে বিবাহ বার্ষিকী সে এক অন্যরকম ইমেজ ও উৎসবের দোলা দেয়।বিবাহ বার্ষিকীর এ দিনটি যতই ঘনিয়ে আসে, স্বামী পরিকল্পনা করে যে, সামনে বিবাহ বার্ষিকীতে ভালোবাসার মানুষকে কি উপহার দিবে। অন্যদিকে স্ত্রীও তার বরকে উপহার দিয়ে বিস্ময় করার জন্য উপটৌকন খোঁজতে যে, তাদের শুভ এ দিনে তাকে কি দেওয়া যায়?কিভাবে রোমাঞ্চিত করা যায় দিনটিকে,?কোন শব্দ দিয়ে ভালোবাসার কথাটা আরো ঘনিভূত করে বলা যায়? এভাবে মনে নানাবিধ কথা জিজ্ঞাসীত হয়। উষ্ণতায় চোখে জল এসে যায়। আসে হাজার ভাবনায় বিড়ম্বনা। উপহার হয় কাঙ্খিত দিনটির মূল আকর্ষণ।অবশেষে শব্দ দিয়ে প্রকাশিত কথা, কেক কাটার পর উপহারে বলা কথা ও শুভেচ্ছা বিনিময়। তাই জীবনের আকর্ষণীয় সজীব ও স্মৃতিময় দিন থেকে সুন্দর কিছু বাছাই করে ইবাদতেও রুপান্তরিত করা যায় যেমন- স্ত্রীর ন্যায্য প্রাপ্য অধিকার মহরানা ঋণ অপরিশোধিত থাকলে তা পরিশোধ করা।

অসহায় নিকটাত্মীয়,ইয়াতিম মিসকিনদের দান সদকাকা আদায় করা। এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে তাঁর প্রতি শোকরগোজার থাকা ও নফল ইবাদত করা। যাতে করে আগামী প্রজন্মের ভেতরে ধর্মীয় অনুভূতি সৃষ্টি হয়। কেননা স্বামী -স্ত্রী সৌন্দর্য সৌম্য- ভদ্রতা এবং জীবনচরিত সন্তানের উপর বিশেষভাবে প্রভাব ফেলে। স্বামী- স্ত্রীর মধ্য শ্রদ্ধাবোধ থাকলে সন্তানের ভেতরেও শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হয় কিবা সন্তান শ্রদ্ধাহীন হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
অতএব, বৈচিত্র্যময় এ জীবনের প্রতিটি মুহুর্তকে চিন্তা ভাবনা ও যৌক্তিকতার বিচারে সত্য, সুন্দর, কল্যাণ ও মঙ্গলময় ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করা অত্যাবশ্যক।

Related Posts

10 Comments

    1. পাঠক মহল বিশেষ করে গ্রাথোর সকল দূরদর্শী গুণী জন সবার প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রেখে
      আপনাদের মূল্যবান মতামত পেশ করার জন্য সবিনয় নিবেদন পেশ করছি।
      সকলের সুস্থ সুন্দর ও সুদীর্ঘ পূণ্যময় সাফল্য কামনা করে দোয়া ও ভালোবাসা প্রার্থী।
      মুহা. কবির হোসেন
      সদস্য গ্রাথো ডট কম
      বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

  1. পাঠক মহল বিশেষ করে গ্রাথোর সকল দূরদর্শী গুণী জন সবার প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রেখে
    আপনাদের মূল্যবান মতামত পেশ করার জন্য সবিনয় নিবেদন পেশ করছি।
    সকলের সুস্থ সুন্দর ও সুদীর্ঘ পূণ্যময় সাফল্য কামনা করে দোয়া ও ভালোবাসা প্রার্থী।
    মুহা. কবির হোসেন
    সদস্য গ্রাথো ডট কম
    বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.