পকেট মার ওরফে {কিডনি পাচারকারী} কর্মের শাস্তি

এক গ্রামে বাস করতো সুমন নামে এক পকেট চোর। এই সুমন রাস্তায় চলতে চলতে কারো না কারো পকেট কেটে টাকা চুরি করবেই। তার এটাই ছিল একমাত্র কর্ম। সে আর কোন কাজ করতে জানতো না।

সুমনের একটা খারাপ দিক রয়েছে। সে অনাথ বাচ্চাদের পকেট মারা টাকা দিয়ে খাবার কিনে দিতো। অনাথ বাচ্চারা সুমনকে অনেক ভালোবাসতো। সুমন এমনিই অনাথ বাচ্চাদের খাওয়াতো না। সে অনাথ বাচ্চাদের কিডনি বেঁচে দিতো। কিন্তু বাচ্চারা তা জানতে পারতো না।

কারণ, “সুমন ঘুম আসা টেবলেট সকলকে ভাতের সাথে খাওয়াত, যাতে একটুকুও শব্দ হলে বাচ্চারা ঘুম থেকে না উঠতে পারে। যখন সকলে ঘুমিয়ে পড়তো তখন একটি বাচ্চাকে নিয়ে হাঁসপাতালে যেতো। আর সেই বাচ্চার কিডনি বেঁচে টাকা নিয়ে নিতো”।
এরফলে কেউ কিছু বুঝতে পারতো না। কারণ যখন বাচ্চারা একে অপরকে দেখে আর একজনকে খুজতে লাগে তখন সুমন সকলকে বলে সেই বাচ্চাটির জোর হয়েছে। তাই বাচ্চাটিকে হাঁসপাতালে ভর্তি করিয়ে রেখেছে। আর যখন বাচ্চারা সেই বাচ্চাটিকে দেখতে চাইতো তখন সুমন বলতো সেই বাচ্চাটির কাছেই জাওয়া জাবে না। কারণ, সেই বাচ্চাটির কাছে যেই যাবে সেও জোরে আক্রান্ত হবে।

এই বুদ্ধির জোরে সুমন টাকা ইনকাম করতো। যখন কিডনি দেওয়া বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে যেতো তখন সুমন আবারও বাচ্চাটিকে নিয়ে আসতো। আর যখন বাচ্চাটি মারা যেতো তখন সকলকে বলতো জরে মারা গেছে। এর জন্য কোন বাচ্চাই সুমনকে সন্দেহ করতো না।

তবে একদিন সেই গ্রামে গোয়েন্দা প্রবেশ করলো। তারা সন্দেহ করে সেই গ্রামে কিডনি পাচার কারী লুকিয়ে রয়েছে। তাই তারা ভিকারি সেজে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করতে থাকলো।

সুমন আবারও একটি বাচ্চাকে নিয়ে কিডনি বেচার জন্য হাঁসপাতালে যাচ্ছিল। গোয়েন্দারা সুমনকে ফলো করে হাঁসপাতালে পোঁছাল। তারা জানতে পারলো সুমনই আসলে কিডনি পাচারকারী। গোয়েন্দারা সুমনকে ধরে ফেললো। আর তাকে জিজ্ঞাসা করলো, “কেন সে বাচ্চাদের কিডনি পাচার করতেছে”?
কিন্তু সুমন বলল, “সে নাকি বাচ্চাদের কিডনি পাচার করে না”।

গোয়েন্দারা বাচ্চাটির জ্ঞান ফিরালো। সেই বাচ্চাটিকে জিজ্ঞাসা করলো, “ সুমন তোমার কি হয়”?
বাচ্চাটি বলল, “সুমন ভাই আমাকে ও আমার মতো অনাথ বাচ্চাদের দেখভাল করে”।
গোয়েন্দারা আর কিছু জিজ্ঞাসা করলো না। সুমনকে ছেড়ে দিলো। তারা সুমনের ওপর আবারও সন্দেহ করতে লাগলো। কারণ, “সুমনের কথাবার্তায় কিছু লুকিয়ে রয়েছিল”।
তবে সুমন পকেট মারতো সেটা গোয়েন্দারা ভালোই মতো বুঝতে পেরেছিল। তারা তবুও সুমনকে ফলো করতো।
একদিন আবারও সুমন একটি বাচ্চার কিডনি বেচার জন্য হাঁসপাতালে নিয়ে আসলো। গোয়েন্দারা এবার ভালো মতো পরিক্ষা করলো।

গোয়েন্দারা ডাক্তার সেজে সুমনের কাছে আসলো। সুমন চুপিচুপি বলল, “এই বাচ্চাটির কিডনি বিক্রি করে যা পাবো তা তোমরা ও আমি ভাগ করে নিবো”।
এবার সুমন ধরা খেয়ে পড়লো। কারণ তো তোমরা জানো তারা ডাক্তার নয় গোয়েন্দা।
তাই এবার সুমনকে ধরে জেল খানায় প্রবেশ করিয়ে দিলো। আর সুমনের ফাসির ওয়ার্ডার আসলো। কারণ, “অনেক বাচ্চাকেই সুমন মেরে ফেলেছিল”।

তো বন্ধুরা কি বুঝলে? অন্যায় করলে একদিন না একদিন ধরা পড়বেই, তাই না! সকলকে ধন্যবাদ।

Related Posts

7 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.