খেজুরের রস নিয়ে কিছু কথা

এই শীতের মধ্যে হয়তো অনেকের মধ্য খেজুরের রস খাওয়ার প্রবণতা আছে। এই খেজুরের রস আমরা সকলেই চিনি। অনেকে হয়তো স্বচক্ষে দেখেছে। যারা শহরে থাকেন তারা এই খেজুরের রসের সাথে তেমন পরিচিত নই। এই খেজুররে রস সাধারণত শীতের মৌসুমেই পাওয়া যায়। গ্রামগঞ্জে এটি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। খেজুরের রস দিয়ে গ্রাম গঞ্জের লোকেরা ফিরনি আর গুড় তৈরি করে থাকে। এমনকি এই ফিরনি নিয়েও বিভিন্ন ভোজের অনুষ্ঠানও দেখা যায়। যা আমাদের এই গ্রাম বাংলার প্রতিচ্ছবির রূপ দেয়। খেজুরের রস নিয়ে অনেক কবিতা রয়েছে। যা থেকে বোঝা যায় যে এটি গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির সাথে জড়িত। আমরা এখন খেজুরের রস সম্পর্কে কিছু ধারনা নিবো।
*রস সংগ্রহের সময় এবং আবহাওয়া:-
বাংলা সনের আশ্বিন মাসের ৩য় সপ্তাহ থেকে শুরু করে বৈশাখ মাসের ১ম সপ্তাহ পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা হয়। ঠান্ডা আবহাওয়া, মেঘলা আকাশ ও কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল পর্যাপ্ত রসের জন্য উপযোগী। এই সময়ে প্রাপ্ত রসের স্বাদও ভালো হয়। পৌষ-মাঘ মাস তাই সবচেয়ে বেশি। পরিমাণে রস পাওয়া যায়। তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে রসের পরিমাণ ও মান কমতে থাকে।
*খেজুরের রসকে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচাতে করণীয়:
বর্তমানে করোনার প্রকোপ অনেক বেড়ে গেছে। তাই খেজুরের রসকে করোনা থেকে বাঁচানোর জন্য কিছু নীতি অবলম্বন করতে হবে। গাছে হাড়ি বসানোর সময় হাড়ের উপরে জাল বা কাপড় দিয়ে দিয়ে ঢেকে দিতে হবে যাতে বাদুড় এসে বসতে না পারে।

খেজুরের রসের উপকারিতা।
চলুন জেনে নেয় খেজুরের রসের উপকারিতা:
• খেজুর গাছের রস উপকারী পানীয় যাকে এক কথায় এনার্জি ড্রিংকস ও বলা যেতে পারে। এটি এনার্জি ড্রিংকের চাহিদা পূরণ করে থাকে।
• খেজুরের রস কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ নির্মূল করতে সহায়তা করে। খেজুরের রস খেয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য কিছুটা নির্মূল করা সম্ভব।
• খেজুরের রস থেকে যে গুড় পাওয়া যায় তাতে আয়রন বা লৌহ বেশি থাকে। যা আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরীতে সহায়তা করে। আর এই হিমোগ্লোবিন আমাদের লোহিত রক্ত কণিকাকে শক্তিশালী করে।
• দুর্বলতা কাটিয়ে কর্মস্পৃহা ফিরে আনতে খেজুরের রস দারুন ভাবে কাজ করে। এটি শরীরকে সবল এবং কর্মক্ষম করে।
• খেজুরের গুড় আখের গুড় থেকেও বেশ মিষ্টি, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। যাতে রয়েছে প্রোটিন।
• আমাদের মধ্যে অনেকেরই অনেক ধরনের রোগ রয়েছে। তার মধ্যে একটা সাধারণ রোগ হচ্ছে অনিদ্রা। আর খেজুরের রসই এই অনিদ্রা দূর করতে সহায়তা করে।
• খেজুরের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
• খেজুরের রসে ১৫% থেকে 20% শর্করা রয়েছে। যা আমাদের শরীরের শর্করার অভাব পূরণ করে।
• শরীরের কোন স্থান অগ্নিদগ্ধ হলে তাতে খেজুরের রস লাগালে ক্ষতির আশঙ্কা থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়।
• খেজুরের রস দিয়ে তৈরী করা ফিরনীতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: যারা ডায়াবেটিস রোগী তারা খেজুরের রস খেতে পারবে না এবং সবাই করোনা ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

Related Posts

6 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.