Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

কালু মাস্তানের পর্দা ফাঁস!

এক গ্রামে ছিল এক মাস্তান। নাম তার কালু মাস্তান। সে ছিল ওই গ্রামের একমাত্র মাস্তান। তার বিশেষ কোনো কাজ ছিল না। সে তার দলবল নিয়ে মানুষদের সবসময় ভয়ে ভয়ে রাখত। সে কোনো দোকানে কিছু কিনলে সে দোকানে কোনো টাকা দিতো না। দোকানদার টাকা চাইলে, সে ওই দোকানদারকে মেরে ফেলার হুমকি দিতো।
তার ভয়ে মানুষ রাতের বেলা একা বের হতো না। কারণ, একা মানুষ পেলে সে তার সব লুটে পুটে নিত। কখনো কখনো মানুষকে খুব পিটাত। তার জন্য ওই গ্রামে একটা ভীতিকর পরিস্থিতি সবসময় বিরাজ করতো। ফলে সবাই সবসময় ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকতো।

Marketing

এইবার ওই গ্রামে একজন বুদ্ধিমান লোক আসে। সে আসার পর শুনতে পায়, এই গ্রামে থাকে একজন বড় মাস্তান। এই মাস্তানের ভয়ে এলাকার লোক সবসময় তটস্থ হয়ে থাকে। পুলিশও নাকি তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পায় নি। সে ঠিক করে এই গ্রামে থেকেই বদমাইশ কালু মাস্তানকে উচিৎ শিক্ষা দিবে।

সে তার মাথা খাঁটাতে শুরু করে। কি করে ওই বদমাইশ কালু মাস্তানকে শাস্তি দেওয়া যায়, তা নিয়ে সে ভাবতে থাকে। হঠাৎ, তার মাথায় একটা দারুণ বুদ্ধি আসে। সে তার বুদ্ধি কাজে ফলানোর জন্য ওই কালু মাস্তানের ডেরায় চলে যায়।

কালু মাস্তান তাকে দেখে তো অবাক। কারণ, তাকে সবাই এতো ভয় পায় যে, গ্রামের লোকজনও ভয়ে তার কাছে আসে না। আর এতো ভীনগ্রামী লোক। তার এখানে এ নির্ভয়ে এলো কি করে। কালু মাস্তান তাকে খুব গম্ভীরভাবে জিজ্ঞাসা করলো, সে কে?
বুদ্ধিমান লোকটি বলে, “আমি একজন ব্যবসায়ী। আমি এই গ্রামের ওই পিছনটায় নদীর পাশে একটা ফ্যাক্টরি তৈরি করতে চাই। এজন্য আমার ওই জমিটা দরকার। আমি ওখানকার মানুষদেরকে জমি বিক্রি করার জন্য টাকাও দিতে চেয়েছি। কিন্তু, তারা রাজি হলেও ওই মাস্টারের জন্য কেউ জমি বিক্রি করতে চায় না।”
“তো ভালো কথা। ওদের জমি আপনাকে বিক্রি করে না তো আমি কি করব?” কালু মাস্তান ধমকের সুরে বলল।

“আহা! ক্ষেপছেন কেন? আমি বলছি কি, আপনি যদি আমাকে ওই জমিটা পাইয়ে দেন, তবে আমি আপনাকে ৩০ লক্ষ টাকা দিব। আপনারা ওদের মেরে না বুঝিয়ে জমিটা হাতাবেন, তা আমার দেখার বিষয় না। আমি আপনাকে মোট ১ কোটি টাকা দিচ্ছি। ওদেরকে ৭০ লক্ষ টাকা দেবেন জমির জন্য। আর আপনি বাকিটা নিবেন। আপনি চাইলে সব টাকাটা নিজেই নিতে পারেন। তবে আমার জমিটা চাই।”

কালু মাস্তান ভাবল, এই এতো দিনে সে এতো দামী একটা মালদার পার্টি পেয়েছে। একে হাতছাড়া করা যাবে না।
তাকে চুপ থাকতে দেখে বুদ্ধিমান লোকটা বলল, “কি! আপনি পারবেন না? ঠিক আছে। আমি অন্য কাউকে কাজটা দিব।”

কালু মাস্তান দেখছে তার সোনার হাঁসটা এভাবে চলে গেলে, তার অনেক লোকসান হবে। তাই সে বলল, “আরে আপনি আমাকে চেনেন না। আমি খুব বড় মাস্তান। আমার ভয়ে গ্রামের সবাই তটস্থ হয়ে থাকে। আরে, আমি তো এই গ্রামে ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছি। তবে আমি খুন করি না। কারণ, একবার গ্রামের ওই ফজল মাস্টারকে খুন করে পুলিশের কাছে ধরা পড়েই যাচ্ছিলাম। তাই আর খুন করি না। বাকি সব সন্ত্রাসবাদীতে আমি এক্সপার্ট। পুলিশও আমার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ যোগার করতে পারে নি।”
“কিন্তু এই কাজটা খুব কঠিন। এতগুলো লোককে সরানো অনেক কঠিন ব্যাপার,” বুদ্ধিমান লোকটা বলল।

কালু মাস্তান বলে উঠল, “আরে এতগুলো লোককে তো নাচাসসে ওই ফজল মাস্টারের ভাই সজল মাস্টার। ওই সজলের বাচ্চাকেউ ওর ভাইয়ের কাছে পৌঁছে দেব। ১০ বছর আগে ওর ভাইকে খুন করেছি। এবার একে খুন করব। আর এতগুলো টাকা পেলে ১টা কেন ১০ টা খুন করতেও আমার দ্বিধা হবে না। কই টাকাটা দেন।”

বুদ্ধিমান লোকটা বলল, “আমি কি টাকা সাথে নিয়ে এসেছি নাকি? দাঁড়ান, আমি ১ঘন্টার মধ্যে টাকাটা নিয়ে আসছি।” এই বলে বুদ্ধিমান লোকটা সোজা পুলিশের কাছে চলে গেলো। তার শার্টের বোতামে থাকা ক্যামেরা ও মাইক্রোফোনটা জমা দিলো। আর পুলিশও কালু মাস্তানের বিরুদ্ধে এরকম বড় প্রমাণ পেয়ে তাকে অ্যারেস্ট করে নিল।

গ্রামের লোক এই নতুন আগন্তুককে ধন্যবাদ জানানোর জন্য আসলো। তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলো, “এই লোকটা অন্য গ্রামের হয়েও আমাদের অনেক বড় সাহায্য করলো। এই লোকটাকে ধন্যবাদ অবশ্যই জানানো দরকার।”

বুদ্ধিমান লোকটা বলল, “আপনাদের আমাকে ধন্যবাদ দেওয়ার কিছুই নেই। আমি তো এই গাঁ এরই ছেলে।” সবাই এটা শুনে চমকে উঠল। বুদ্ধিমান লোকটা বলল,
“আমি ফুজু। মৃত মাস্টার ফজলের ছেলে!”

Related Posts

14 Comments

Leave a Reply