সিজার ডেলিভারি, কতটা যৌক্তিক?

সিজারিয়ান পদ্ধতিতে বা সি সেকশনে শুধুমাত্র তখনই একটি শিশুর জন্ম দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয় যখনঃ-

১) গর্ভে জমজ বা একাধিক শিশু থাকে এবং সেই নারীর উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো দুর্বলতা থাকে।

২) গর্ভের শিশুর মাথা যদি নিচের দিকে মুখ করা না থাকে এবং চেষ্টার পরও যদি শিশুর মাথা নিচমুখী করা না যায়।

৩) আগে বার শিশু জন্ম দেয়ার সময় যদি কোনো সমস্যা হয় এবং যদি মনে করা হয় শিশুর সার্জারি করতে হবে

৪) নারীর পেলভিস / শ্রোণির তুলনায় শিশুর আকৃতি অতিরিক্ত বড় বা সে স্থানে যদি কোনো ইনফেকশন থাকে সেক্ষেত্রে নারীর যোনিমুখ ফেটে যাওয়ার ভয়ে সার্জারি করা হয়।

৫) ল্যাবার শুরু হওয়ার ১৪-২০ ঘন্টার মধ্যও যদি শিশু ভূমিষ্ট না হয় সেক্ষেত্রে সার্জারি করতে হয়।

৬) ডাক্তার যদি পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পরে বলে যে শিশুর বা মাতার বিশেষ কোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা আছে, তখন সার্জারি ছাড়া উপায় কি?

সি-সেকশনের সুবিধা সমূহঃ-

বিশেষ করে উল্লেখ করা মতো তেমন কোনো সুবিধা নেই কারণ সি সেকশনে তখন নেয়া হয় যখন ন্যাচারাল পদ্ধতিতে জন্ম দেয়া কঠিন বা বিপদজনক। সি সেকশন একদম ন্যাচারাল বার্থের একটা আলটার্নেটিভ।

সি-সেকশনের অসুবিধা সমূহঃ-

১) স্বাভাবিক জন্মদানে একজন নারী ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যেতে সক্ষম হয় কিন্তু সি সেকশনে শিশু জন্ম দিলে তা অন্তত ২ মাস বা তার চেয়েও বেশি সময় পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

২) শিশুর বুকে অনেক সময়ই ফ্লুইড জমে থাকে যা ন্যাচারাল বার্থে সাধারণত নিজে থেকেই বের হয়ে যায়। দ্রুত সেই ফ্রুইড বের করা না হলে শিশুর শ্বাসকষ্টে মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

৩) এবডমেনে ব্যথা হতে পারে। আবার যেহেতু অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, তাই ইনফেকশন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটের কথা। যুদ্ধ শেষে সবাই সুখী সংসার করে জীবন কাটাবে এটাই তো কাম্য। কিন্তু ক্যাথারিন বার্কলে নামের একজন তাদের প্রেমে সৃষ্ট শিশুকে জন্ম দিতে যেয়ে মারা যায়।

তখন সি সেকশন যে খুব কতটা উন্নত ছিলো তা সন্দেহজনক। তবে সেটা যাই হোক, সি সেকশন বেশ খরচ সাপেক্ষ দেখে এখনো এটা সকল শ্রেণীর মানুষের অপছন্দের মধ্যেই রয়ে গেছে এটি।

বিষয়টা ভাবার মতো। কত জীবন বাঁচানো সম্ভব হতে পারে এই সার্জাতি পদ্ধতিতে তা ভাবলেই খুব ভালো লাগে। অবশেষে সবার সুস্থতা কামনা করি। ধন্যবাদ।

[ সিজারিয়ান পদ্ধতি এখন এতটাই কমন যে উন্নত দেশে ৩ টির ১ টি শিশুই সিজারিয়ান পদ্ধতিতে জন্মায়। এর নামকরণের সাথে মূলত সম্রাট জুলিয়াস সিজারের সম্পর্ক আছে বলে ধারণা করা হয়। ]

Related Posts

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.