সততার পুরস্কার! কুঁজো বুড়ি ও জাদুর মাছ

গ্রামের নাম ছিল ধোতরাপুর। সেই গ্রামে বাস করত এক কুজো বুড়ি। তাঁর কোন সন্তান ছিল না। তাঁর স্বামী নাম নিতেন বুড়ো। সে গত ৫ বছর হলো মারা গেছে। কুজো বুড়ির পরিবারে সন্তান না থাকায় তাকে দিনরাত কাজ করে নিজের পেট চালাতে হতো। সে বুড়ি হওয়ায় অনেক কষ্ট করতে হয়। আর তাঁর কাজ ছিল নোদিতে মাছ ধরা।
সে সেখানে শিপ নিয়ে মাছ ধরতো।

আর তাঁর মাছ ধরা দেখে সেই গ্রামের জেলেরা তাকে নিয়ে ঠাট্রা করত। এতে কুঁজো বুড়ির মনে খুব কষ্ট হতো। সে কারো কথায় তাঁর মাছ ধরা বন্ধ করত না। কারণ, মাছ না ধরলে তাঁর খাবার কীভাবে জগান দিবে। সে তাঁর মাছ বেশী দামে বিক্রি করলে তাঁর আশে পাশের ছোট বাচ্চাদের খিচুরি রান্না করে খাওয়াত। কারণ, সে রান্না করে বাচ্চাদের খাওয়ালে অনেক তৃপ্তি পেতো। আর বাচ্চারাও তাকে অনেক ভালোবাসত।

একদিন কুঁজো বুড়ি সকালে মাছ ধরার জন্য নদীর কাছে একটি আম গাছের নিচে বসলো। সে শিপ পানিতে ফেললো আর তাঁর শিপে একটি সোনালি মাছ আটকালো। বুড়ি আসতে আসতে শিপ ডাংগায় উঠিয়ে আনল। আর দেখল এটি একটি আজব মাছ। কারণ, এর রং সোনালি আর মাছটি ছিল জাদুর মাছ।
বুড়ি ভাবলো এই মাছটি বাজারে নিয়ে গেলে সে অনেক টাকা পাবে। কিন্তু মাছটি কথা বলতে পারতেছে। এই অদ্ভুদ কাণ্ড দেখে বুড়ি অবাক হয়ে মাছটির দিকে দেখে রইল। তারপর মাছটি বুড়িকে বলল আমাকে মেরো না আমি মরতে চাই না। বুড়ি বলল তোমাকে না বেচলে আমাকে না খেয়ে সারা দিন কষ্ট করতে হবে।

কারণ, আজ আর মাছ উঠবে না। সব জেলেরা মাছ ধরে বাড়িতে চলে গেছে। আমি এই ভর দুপুরে বসে নিজের কষ্ট বাড়াতে চাইনা। মাছটি বলল, তোমার কি চাই আমাকে বল। বুড়ি বলে, তুমিতো এতো ছোট মাছ তুমি আমার কি সাহায্য করতে পারবে। মাছটি বলে, তোমার কি সোনা চাই? বুড়ি বলে না না। আমার আজকের খাবার হলেই যথেষ্ট। মাছটি বলল, তোমার সততার জবাব নেই! তাহলে তুমি জেলেরা যখন মাছ ধরে বাড়িতে চলে যাবে তখন তুমি এই আম গাছে এসে আমাকে ডাকবে আমি তোমার জন্য খাবার এনে দিবো। আর আজকের জন্য এইটুকু খাবার বাড়িতে নিয়ে যাও।

বুড়ি দেখল তাঁর সামনে অনেক খাবার রয়েছে। আর বুড়ি হাশি মুখে খাবার নিয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছিল তখন বুড়ি পিছনে দেখল মাছটি নেই। তখন বুড়ি বাড়িতে চলে আসল আর খাবার খেয়ে বাড়ির কাজ করতে থাকল।
কিন্তু সেই গ্রামে একটি লোভি জেলে ছিল। এই বিষয়টি তাঁর নজরে পড়ল যে বুড়ি মাছ না ধরে কীভাবে খাবার খাচ্ছে আর এতো সুন্দর খাবার এই গ্রামে কেউই খায়না। আর এই খাবার রাজারা খেয়ে থাকে। তারপর সেই লোভি জেলে বুড়ির পিছু নিয়ে সেই আম গাছটির কাছে পোঁছাল।

আর লোভী জেলে আমগাছের পিছনে লুকিয়ে সব ঘটনা দেখতেছিল। তারপর বুড়ি বাড়িতে চলে যাওয়ার পর লোভী জেলে আমগাছের নিচে এসে মাছটির নামধরে ডাকল আর মাছটি আবার চলে আসলো। সে মাছটির কাছে সোনা চাইলো মাছটি বুঝলো এই লোকটি লোভী। তাই সে তাকে বলল, আমার সাথে পানিতে ডুব দিলে অনেক সোনা পাবে।
লোভী জেলে মাছটির কথামতো তাঁর সাথে পানিতে ডুব দিল। এবার মাছটি জাদু করে তাকে পানিতে মেরে ফেললো।
তো বন্ধুরা উপরের গল্প থেকে কি বুঝলে? লোভ করা কি ভালো? অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে।
এতক্ষন ধরে মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।

Related Posts

14 Comments

  1. ভালো লিখেছেন। এ ধরণের নৈতিক গল্পগুলো পড়লেই ভালোলাাগা কাজ করে।

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.