শুধু খাদ্য নয়, চাই পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য।

শুধু খাদ্য নয়, চাই পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য।

সকাল থেকেই শুরু হয় আমাদের নিত্যদিনের ব্যস্ততা। আমরা কাজ করি, আয় করি, কারণ কি? ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্যে। আড় ভালোভাবে বাঁচতে সবার আগে আমাদের শরীরটাকে ঠিক রাখতে হয়। আর শরির ঠিক রাখতে চাইলে আমাদের শুধু খেলেই হবেনা। নিয়ম মেনে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তাই খাবার যেমন প্রয়োজ়নীয়, ঠিক তেমনি পুষ্টির দিকে খেয়াল রেখে খাওয়াটাও প্রয়োজনীয়।

খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা

প্রথমেই জেনে নেই, আমাদের খাবারের কেন প্রয়োজন হয়ে থাকে। এই যে আমরা প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ঘুমাতে যাবার আগ অবধি কত কত কাজ করি, সেসব করতে আমাদের শরিরের শক্তি ক্ষয় হয়। পুনরায় কাজ করতে আমাদের পুণরায় শক্তির প্রয়োজন পড়ে। আর এই শক্তি আমরা পেয়ে থাকি খাবার থেকে। কাজেই আমাদের শরির পরিচালনার জন্যে খাবার গ্রহণের কোন বিকল্প নেই।

পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা

আমাদের শরিরকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্যে অনেক রকম পুষ্টির প্রয়োজন পড়ে থাকে। এই সমস্ত পুষ্টি উপাদান সমূহকে মোট ছয় ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। সেগুলো হলঃ-

১) শর্করা বা কার্বোহাইড্রেডঃ  

কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন এই তিনটি উপাদান নিয়ে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেড গঠিত। খাদ্যের এই উপাদান দেহে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তাপ শক্তি উৎপাদনের প্রধান উৎস।

২) আমিষ বা প্রোটিনঃ

 কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন সমন্বয়ে আমিষ বা প্রোটিন গঠিত হয়ে থাকে। দেহের বৃদ্ধি, কোষ গঠন ও ক্ষয়পূরণ, এগুলো হচ্ছে আইমষ বা প্রোটিনের কাজ।

৩) স্নেহপদার্থ বা ফ্যাটঃ

কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন এই তিনটি উপাদান নিয়ে স্নেহপদার্থ বা ফ্যাট গঠিত হয়ে থাকে। ফ্যাট জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ হচ্ছে তাপ শক্তি উৎপাদন করা।  

৪) ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণঃ

ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ সাধারন খাদ্য অতি অল্প পরিমাণে থেকে দেহের স্বাভাবিক পুষ্টি অ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। খাদ্যের এই উপাদানান রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে।

৫) খণিজ লবণঃ

জীবদেহের স্বাভাবিক পুষ্টি, স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য খণিজ লবণ এর প্রয়োজন আছে।

৬) পানিঃ

কথায় বলে পানির অপর নাম জীবন। হ্যাঁ, ঠিক। পানি ছাড়া জীবদেহ চলতে পারেনা। দেহের গঠন অ অভ্যন্তরীণ কাজ করতে পানি একটি অপরিহার্য খাদ্য উপাদান।

শুধু একনাগাড়ে খেলেই তো চলবেনা। আমাদের পুষ্টি মেনে খাবার খেতে হবে। কিছু খাবার অত্যান্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ হলেও সেটা অতিরিক্ত গ্রহণের কারণে হিতে বিপরীত হতে পারে। কাজেই যে খাবার যতটুকু দরকার সেটা মেনেই খেতে হবে।

তাহলে আসুন জেনে নেই কোন খাবার কতটূকু খেলে আমাদের পুষ্টি বজায় থাকবে।

একজন পুর্ণবয়স্ক মানুষের খাবার অ পুষ্টীর চাহিদা নির্ভর করে সেই ব্যক্তির শারীরিক পরিশ্রমের উপর। আর প্রোটিন কতটুকু নিবেন সেটা নির্ভর করে ব্যক্তির ওজনের উপর। প্রতি এক কেজি অজনের জন্য মোটামুটি ১ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করাই যথেষ্ট।

মোট খাবারের মধ্যে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ নানারকম কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা উচিত। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ স্নেহ পদার্থ এবং বাকি অংশ প্রোটিন  গ্রহণ করা উচিত। এছাড়াও প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিনের উৎস থাকা প্রয়োজন। ৬০ কেজি অজনের একজন পুর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন মোটামুটি ২৮০০ কিলোক্যালরি খাবার গ্রহণ করা উচিত। ক্যালরি হচ্ছে খাবারের শক্তি পরিমাপের একক।

এসব খাবারের সাথে অবশ্যই পরিমাণ মত পানি পান করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের জন্যে ৩ থেকে ৩.৫০ লিটার পানি প্রতিদিন পান করা উচিত।

বেঁচে থাকতে হলে খাবারে কোন বিকল্প নেই। আর শুধু খেলেই হবেনা, নিয়ম করে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে। খাবার ও পুষ্টির পাশাপাশি অল্প ব্যায়াম আমাদেরকে সুস্থ রাখতে খুবই দরকারি। তাই আসুন আমরা পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করি, সাথে হালকা ব্যায়াম করি। সুস্থভাবে জীবনযাপন করি।

Related Posts

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.