শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ায় প্রতিক্রিয়া

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি পুনরায় বাড়ানো হয়েছে এটা তো পুরনো খবর। ধাপে ধাপে ছুটি বাড়ার ফলে প্রায় একবছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এখন জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত বন্ধ বাড়ানো হয়েছে। এখন ছুটি শেষ হবে কবে সেটাই সবার মনে প্রশ্ন। ধাপে ধাপে ছুটি বাড়ার কারণে এখন কম- বেশি সবারই জানা বিষয় এটা।

তবে ছুটি বাড়ার কারণে দুইধরণের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন- সংক্রমণ এড়াতে স্কুল- কলেজ বন্ধ রাখাই উচিত। কিন্তু অন্য সবকিছু চলছে। বাজার, অফিস, মার্কেট, হোটেল, রেস্তোরা সবই চলছে। এখন এতদিন বন্ধ থাকার কারণে মানসিক চাপ আর হতাশার সৃষ্টি হওয়া মোটেই অস্বাভাবিক নয়। একে তো নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষাব্যবস্থা চলছে তার উপর এতদিন বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা মানসিক হতাশায় ভুগছেন। তারা বলছেন- অনলাইনে পরীক্ষা দেয়া মানে নেটওয়ার্কের নিত্যদিনের সমস্যা, সার্ভারে সমস্যা তো থাকেই। তাছাড়া সাবমিশন অনেক সময় টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে হয় না। পরীক্ষা দেয়ার চেয়ে সাবমিশন কমপ্লিট করার জন্য দুশ্চিন্তা হয় বেশি। তবে শিক্ষকরা বলছেন- তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন সব শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার।

এদিকে যারা নিয়মিত পাবলিক বাস বা পরিবহনে যাতায়াত করেন বা মেসে বা হলগুলোতে থাকেন, তারা এবং অভিভাবকেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বন্ধ বাড়ানোতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কারণ আবাসিক হলগুলোতে বা পাবলিক পরিবহনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন। এক্ষেত্রে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। প্রতিদিন যাতায়াতে শিক্ষার্থীদের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। এছাড়া কতখানি সক্ষম হবে প্রতিষ্ঠানগুলো সব নিয়ম- কানুন মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

আগের ক্লাসে পড়ানো বা পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থাকে আপাতত বন্ধ রেখে অনলাইনে ক্লাস – পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে সেশনজট বা শিক্ষাবর্ষের জটিলতা কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে যারা ফ্লেশ গ্রাজুয়েট বা পোস্ট গ্রাজুয়েট হিসেবে বের হচ্ছেন, চাকরি পাওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে এই পরিস্থিতিতে। কারণ অনেক পুরনো কর্মী চাকরি হারাচ্ছেন। বেতন ঠিকমতো দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। এমন অবস্থায় নতুন কর্মচারী নেবে কে?

এদিকে বাসায় বা বাড়িতে থেকে ক্লাস করাটা কঠিন হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীদের জন্য । প্রথমত বাংলাদেশের সব জায়গায় নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায় না আর দ্বিতীয়ত অনেকে কাজ বা চাকরি হারানোর কারণে পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকে সেমিস্টার ড্রপ দিচ্ছেন। অনেকের আবার পড়াশোনাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

সর্বোপরি, দুই ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কারণে। অনেকে বলছেন- এই ভার্চুয়াল ক্লাস, পরীক্ষা, পড়াশোনা আর কত? আবার অনেকে বলছেন- কষ্ট হলেও রোগ থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখতে আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাই যুক্তিসঙ্গত।

Related Posts

10 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.