শরীরের ওজন কমানো ও অন্যান্য উপকারে জাদুকরী পানীয় ডিটক্স ওয়াটার

ডিটক্স ওয়াটার অনেকের কাছেই নতুন একটি শব্দ। কিন্তু এটা এমন জাদুকরী একটি পানীয় যার ব্যাপারে আমাদের সকলেরই কমবেশি জানা জরুরি। এটি সাধারণত শরীরের অধিক ওজন কমাতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু শুধু ওজন কমানো নয় শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এই ডিটক্স ওয়াটার। তাছাড়া হজম ক্ষমতা বাড়ানো ও শরীরের PH ভারসাম্য ঠিক রাখতে সহায়তা করে।এর আরেকটি বিশেষ গুণ হলে এটি শরীরের মেটাপলিজম বাড়াতেও সাহায্য করে যা এই করোনাকালে আমাদের জন্য মারাত্মক উপকারী।
এবার আসুন জেনে নিই ডিটক্স ওয়াটার আসলে কি?
বিশেষজ্ঞদের মতে,একজন মানুষের দিনে কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করা উচিত। আর এই পান করা পানির সাথে কিছু উপকরণ মিশিয়ে ৫/৬ ঘন্টা রেখে দিলেই তৈরি হয়ে যায় ডিটক্স ওয়াটার।
এবার জানতে হবে কিভাবে তৈরি করা যায় এই ম্যাজিক পানীয়। বেশ কয়েকটি পদ্ধতিতে এটি তৈরি সম্ভব। আসুন আমরা আজ খুব সাধারণ কিছু উপাদান দিয়ে ডিটক্স ওয়াটার তৈরির সহজ ৬টি পদ্ধতি জেনে নিই।

১.লেবু,শসা ও পুদিনা পাতা দিয়ে: লেবু তে রয়েছে ভিটামিন সি যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।এছাড়া শসা ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। এই উপকরণগুলো দিয়ে ডিটক্স ওয়াটার তৈরির জন্য কাচের গ্লাস বোতল অথবা কাছের ঢাকনাসহ পাত্রে পানি নিতে হবে। পাস্টিক কিংবা অন্যকিছুতে পানি নেয়া এড়িয়ে চলুন। এরপর ওই পানির পাত্রে স্লাইস করা লেবু,শসা এবং পরিমাণমতো পুদিনা পাতা দিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে প্রায় ৫/৬ ঘন্টা। ৫/৬ ঘন্টা বাদে পানির পরিবর্তে এটি খাবেন। এছাড়া পাত্রের পানি ফুরিয়ে যাবার আগে সেখানে আবার পুনরায় পানি মিশিয়ে নিতে পারেন।

২.কাঁচা আম,মধু এবং পুদিনা: এটি খুবই ইফেক্টিভ এবং মজাদার একটি ডিটক্স তৈরি পদ্ধতি। কাঁচা আম কুচি করে কেটে কাঁচের গ্লাস কিংবা পাত্রের পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরসাথে মেশাতে হবে পুদিনা পাতা এবং পরিমাণমতো মধু। মধু শরীরের মেটাপলিজম বাড়াতে খুবই উপকারী উপাদান। এই উপাদানগুলোর ভেজানো পানি ৫/৬ ঘন্টা পর পান করা যাবে।

৩.গাজর,মৌরি, পুদিনা: গাজর ভালোভাবে ধুয়ে স্লাইস করে কেটে সব উপাদানসহ পাত্রের পানিতে ভিজিয়ে ৬/৭ ঘন্টা পর পান করতে হবে। আপনি চাইলে ৬/৭ ঘন্টা পর স্লাইস গাজরগুলোও খেয়ে ফেলতে পারবেন। তাতে কোন সমস্যা হবে না।

৪.ফ্রুটস ডিটক্স ওয়াটার: এই পদ্ধতিতে তৈরির জন্য বিভিন্ন রকম ফল যেমন আপেল,কমলা,আঙুর,তরমুজ এবং সামান্য তুলসি পাতা নিয়ে পানির পাত্রে ভিজিয়ে রাখতে হবে।তবে মনে রাখবেন ফ্রুটস ডিটক্স ওয়াটার তৈরিতে উপাদান গুলো বেশিক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে ফলগুলো পঁচে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ৩/৪ ঘন্টা পরই এই পানীয় পান করা যাবে।

৫.লেবু,আদা ও পুদিনা পাতা : এটি সবচেয়ে এফেক্টিভ ডিটক্স ওয়াটার।আদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আন্টিএক্সিডেন্ট যা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী। আবার আদা হজম শক্তি বাড়ায় এবং পেট ফাঁপা থেকে রক্ষা করে। পাশাপাশি এতে রয়েছে জিন জিয়া বিন এনজাইম যা প্রোটিন ভাঙতে সহায়ক। এই ডিটক্স ওয়াটার তৈরির জন্য সবগুলো উপাদান পাত্রের পানিতে আগের দিন রাতে ঘুমানোর আগে ভিজেয়ে পরের দিন খেতে পারবেন। ওজন কমাতে এটি উপকারী ভূমিকা পালন করবে।
৬. লেবু,পুদিনা এবং গ্রীন টি: গ্রীন টি ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে, যারা ওজন মেইনটেইন রাখতে চান তাদের দিনে কমপক্ষে একবার গ্রীন টি পান করা উচিত। এই ডিটক্স ওয়াটার বানানোর জন্য কুসুম গরম পানি নিলে ভালো হয়। ওই পানিতে লেবু,পুদিনা এবং গ্রীন টি মিশিয়ে ১থেকে দেড় ঘন্টা পর এটি পান করা শুরু করতে পারেন।

আপনাদের সাথে ৬ প্রকার ডিটক্স রেসিপি শেয়ার করেছি। আর হ্যাঁ উপাদানসহ ভেজানো পানি ফ্রিজে রাখবেন। আর কেউ ফ্রিজে রাখতে না চাইলে অবশ্যই ঠান্ডা,শুষ্ক জায়গায় ঢেকা রাখতে হবে আশা করি খুব সহজে এই পানীয় বানাবেন এবং অবশ্যই পান করার চেষ্টা করবেন।
Always remember one thing healthy living is just a choice. So stay fit stay healthy..
আবার নতুন টিপস এ দেখা হবে। আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

6 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.