রমজানে সুস্থ থাকার উপায় এবং করণীয়-বর্জণীয়

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

আসসালামু আলাইকুম,কেমন আছেন সবাই?আশা করি ভালই আছেন।আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।আজকে কথা বলব আসন্ন রমজানে সুস্থতা এবং করণীয়-বর্জণীয় কাজ সম্পর্কে।

রোজার মাসে আমাদের না খেয়ে থাকতে হয়।যদি এসময় লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনা যায় তাহলে সুস্থ থাকা এবং বিভিন্ন সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।রোজার সময় সারাদিন না খেয়ে থাকতে হয় বলে অনেকে রোজা রাখতে চায় না।কিন্তু রোজা রাখার রয়েছে বিভিন্ন উপকারিতা।তাই আজ আমরা রোজার উপকারিতা,রোজার সময় করণীয় ও বর্জণীয় বিষয় সম্পর্কে জানব।আমাদের মনে হতে পারে রোজায় সারাদিন অভুক্ত থাকার ফলে শরীরের শক্তি কমে যাবে।তাহলে রোজার দ্বারা আবার উপকার কিভাবে হয়?আসলে এই ধরণের ভাবনা সঠিক নয়।রোজা রাখার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকার হয়।তাহলে চলুন রোজার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

রোজা রাখার উপকারিতাঃ

** বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন রোজার সময় আমাদের ব্রেন থেকে এক প্রকার নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর নিঃসরণ হয়।যা অধিক নিউরণ তৈরী করে।এর ফলে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

** রোজা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সহায়তা করে।

** রোজা রাখলে আমাদের রক্ত নালীতে জমে থাকা চর্বি হ্রাস পায়।ফলে যাদের রক্তে কোলেস্টরেলের মাত্রা বেশি তাদের হার্ট ব্লকের ঝুকি কমে যায়।

** রক্তে যদি চর্বি জমতে না পারে তাহলে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত হার্টে সহজেই পৌছাতে পারে।তখন হার্ট ভাল থাকে।সুতরাং হার্টের সুস্থতায় রোজার গুরুত্ব অপরিসীম।

** রোজা রাখলে লিভারের গ্লাইকোজেন ও চর্বিকে বিপাকের মাধ্যমে আমাদের শরীর শক্তি সঞ্চয় করে।ফলে লিভারের জমে থাকা চর্বি ক্ষয় হয়।এবং আমাদের লিভার ভাল থাকে।

** রোজায় দিনের বেলায় পানি খাওয়া বন্ধ থাকায় আমাদের কিডনী বিশ্রামের সুযোগ পায়।তাই কিডনী সুস্থ থাকে।

** আমরা সারা বছর বিভিন্ন আজেবাজে খাবার খাই।ফলে আমাদের পাকস্থলি সারা বছরই কাজ করে।কিন্তু রোজার মাসে সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে আমাদের পাকস্থলি পর্যাপ্ত বিশ্রামের সুযোগ পায়।ফলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।

 

আসুন এবার জেনে নেয়া যাক রোজায় আমাদের কি কি করণীয়ঃ

রোজায় আমাদের সারাদিন অভুক্ত থাকতে হয় ফলে রোজায় দিনের বেলায় হালকা কাজের ফাকে ফাকে বিশ্রাম নিতে হবে।রোজার সময় যেন বেশি ঘাম না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।সেহরী ও ইফতারিতে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার যেমনঃ সেদ্ধ ডিম,দই,সালাদ,সব্জি,শরবত,সামুদ্রিক মাছ,ফলমূল,সামান্য মাংস,টমেটো ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন।তারাবীর নামাজে যাওয়ার সময় সাথে করে সামান্য লবণ মিশ্রিত পানি বা স্যালাইন মেশানো পানি বোতলে করে নিয়ে যেতে পারেন।রোজার সময় বেশিক্ষণ রোদে থাকা থেকে বিরত থাকুন।নিয়মিত গোছল এবং পরিষ্কার থাকার চেষ্টা করুন।যারা খুব অসুস্থ তারা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে রোজা রাখতে পারেন।

রোজায় বর্জণীয় কাজঃ

রোজার সময় অতিরিক্ত কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।কারন বেশি কাজ করলে বেশি ঘাম হবে এবং ঘামের সাথে সোডিয়াম ক্লোরাইড বেরিয়ে গেলে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূণ্যতা দেখা দিতে পারে।রোজার সময় বেশীক্ষণ সূর্যের নিচে থাকা যাবে না।ধূমপানসহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকতে হবে।রোজার মাসে বিভিন্ন ভাজাপোড়া খবার যেমনঃ আলুরচপ,বেগুনী,পেয়াজীসহ বিভিন্ন গুরুপাক খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা চিনি জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকুন।শরবতে তারা চিনি না দিয়ে লেবুর সাথে সামান্য লবণ মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।

যদি এই টিপস গুলো মেনে চলতে পারে তাহলে আশা করছি রোজার মাসে সুস্থ থাকতে পারবেন।সুতরাং নিজে সুস্থ থাকুন এবং পরিবারকে সুস্থ রাখুন।

তো আজকে এপর্যন্তই।পরবর্তীতে আবারো অন্য কোনো বিষয় নিয়ে উপস্থিত হবো,ইনশাআল্লাহ।সবাই ভাল থাকবেন।

Related Posts

12 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.