যেভাবে আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করবেন

সম্মানিত পাঠকরা সবাইকে জানাচ্ছি শুভেচ্ছা। সবাই নিশ্চয়ই ভাল আছেন। মুসলিম ভাই বোনদের আমার সালাম জানাচ্ছি। আসসালামু আলাইকুম। মহান আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন একমাত্র উনার ইবাদাত করার জন্য। আর আমরা মানে মানুষ হচ্ছে আল্লাহ্‌র সৃষ্টির সেরা জীব। ১৮০০০ মাখলুকাত এর মধ্যে মানুষকে তিনি সেরা বানিয়েছেন। আমাদেরকে মহান আল্লাহ্‌  এতো বেশি সম্মানিত করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তাই আমরা মহান আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করে শেষ করতে পারব না। 

যেভাবে আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করবেন

আমাদিগকে মহান আল্লাহ্‌ এতো বেশি নেয়ামত দিয়েছেন যে আমারা এগুলা গুনেও শেষ করতে পারবো না। মানুষের মধ্যে তিনি খুব মূল্যবান নেয়ামত দান করেছেন। এই মূল্যবান নেয়ামতগুলার মধ্যে দামি একটি নেয়ামত হচ্ছে আমাদের জ্ঞান বা বুদ্ধি। এই বুদ্ধির কারণে মানুষ পৃথিবীতে অনেক কিছু করতে পারছে। মানুষ বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতে পারছে। মানুষ সুন্দর করে কথা বলতে পারছে।

মানুষ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় তার অবস্থান সুন্দর করে তৈরি করতে পারছে। মানুষ লেখাপড়া করতে পারছে। মানুষ জ্ঞান বিজ্ঞান নিয়ে চিন্তা করতে পারছে। মানুষ অনেক গবেষণা করতে পারছে। একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে সৎ উপদেশ ও সৎ কর্মের আহ্বান জানাতে পারছে। মানুষ সমাজে সুন্দর কাজের জন্য দাওয়াত দিতে পারছে। মানুষ সুন্দর ও সুস্থ সমাজ তৈরি করতে পারছে। মানুষ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারছে।

মানুষ শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পারছে। মানুষ সুন্দর করে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালিত করতে পারছে। মানুষ পৃথিবীতে বন্ধন বা সম্পর্ক তৈরি করতে পারছে। এতো সব কিছু মহান আল্লাহ্‌ আমাদেরকে দান করার পরেও কিন্তু আমরা ভুলে যাই আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ্‌র কথা। মুসলিম হিসাবে কিন্তু এই কাজ থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে। আল্লাহ্‌র কথা কখনও আমাদের ভুলা চলবেনা।

সব সময় উনার নাম আমাদের মনে গেঁথে রাখতে হবে, অন্যথায় আমাদের অনেক শাস্তি ভোগ করতে হবে কবরে এবং পরকালে। কারন মহান আল্লাহ্‌ পবিত্র আল কোরআন – এ বলেছেন “তোমরা আমাকে স্মরণ করো”। তাই পরকালের কঠিন আযাব থেকে বাঁচতে ও আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে হলে আমাদের প্রতিদিন এবং প্রতিটি মুহূর্তে মহান আল্লাহর কথা স্মরণের মাধ্যমে উনার শুকরিয়া বেশি বেশি আদায় করা উচিত। 

আমরা এমন মোসলমান হয়েছি যে,  প্রতিদিন এতো অসংখ্য নেয়ামত মহান আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে পাওয়ার পরেও দুনিয়াবি চিন্তা নিয়ে পড়ে থাকি। আখিরাতের কথা এক মুহূর্ত মনে আনার চেষ্টা করি না। বরং শয়তানের ধোঁকায় পড়ে গিয়ে সারাদিনের সুন্দর মুহূর্তগুলো নষ্ট করে ফেলি।

দেখা গেছে আযান হলে আমরা মসজিদের পাশ দিয়ে যাই কিন্তু আমাদের নামাজের কোন তাড়না আসে না। একজন মানুষ নামাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে পারে। যারা খাঁটি মুসলমান তারা নামাজের পাশাপাশি কোরআন তিলাওয়াতে মগ্ন থাকেন। তিলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করে থাকেন। তারা যিকির এর মাধ্যমেও মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে থাকেন। 

খাঁটি মুসলিমগণ প্রতিদিন আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করে থাকেন। যেমন – যেকোনো ভালো কাজ আরম্ভ করার আগে বিসমিল্লাহ্‌ বলে শুরু করেন। 

* বিসমিল্লাহ্‌ এর অর্থ হচ্ছে শুরু করছি আল্লাহর নামে। আরও তারা বলে থাকেন আলহামদুলিল্লাহ্‌। 

** আলহামদুলিল্লাহ্‌ এর অর্থ হচ্ছে সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। আমরা যখন কোনো ভালো সংবাদ পাবো তখন আলহামদুলিল্লাহ্‌ বলবো। আমরা আরো বলতে পারিঃ 

** সুবহানাল্লাহ। সুবহানাল্লাহ অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্‌ পবিত্র ও সুমহান। আশ্চর্যজনক ভালো কিছু যদি আমরা দেখি তাহলে বলবো সুবহানাল্লাহ। আমরা আরও বলতে পারিঃ

** মাশাল্লাহ। মাশাল্লাহ অর্থ হচ্ছে “মহান আল্লাহ্‌ যা ইচ্ছা করেছেন”। অতীতকালে কিছু ভালো হয়েছে বা কনো কিছু ভালো হয়েছে অথবা মহান আল্লাহ্‌ যা  ( ভালো ) ইচ্ছা করেছেন তা হয়েছে বুঝাতে আমরা বলবো মাশাল্লাহ।  

** আমরা বলতে পারি ইনশাল্লাহ। ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতের কোনো ঘটনাকে নির্দেশ করে বলা হয়। ইনশাল্লাহ অর্থ হচ্ছে “যদি মহান আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন” । আগামিতে বা ভবিষ্যতে কোনো কাজ করার আগে এই পরিভাষাটি মূলত ব্যবহৃত হয়ে থাকে।    

** আমরা বলতে পারি “আল্লাহু আকবার”। আল্লাহু আকবার এর অর্থ হলো আল্লাহ্‌ সবকিছুর চেয়ে বড় ও মহান। মহান আল্লাহ্‌র প্রশংসা, তাসবিহ, যিকির এবং তাকবীরের মধ্যে আল্লাহু আকবার সবচেয়ে বড়। তাই বেশি বেশি এই তাকবির আমাদের পাঠ করা দরকার। 

মহান আল্লাহ্‌ আমাদের নেক হায়াত দান করুন ও উনার বেশি বেশি প্রশংসা করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

Related Posts

5 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.