মাদারীপুরে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ

মাদারীপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের এক ছাত্রীকে শারিরীক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অধ্যক্ষের বিচারের দাবিতে নির্যাতনের শিকার ছাত্রী মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি এলাকার ওই ছাত্রী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে কম্পিউটার অপারেশন ট্রেডের সপ্তম ব্যাচের নিয়মিত কোর্স সম্পন্ন করেছে। তিনি গত মঙ্গলবার তার সনদ তুলতে গেলে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়ে ছিলেন। সদন না পাওয়ার কারণে বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানাতে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে শারীরিক নির্যাতন চালায় বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও ওই ছাত্রী শিক্ষাকালীন সময় প্রথম তিন মাস শিক্ষা ভাতা পেয়ে ছিলেন কিন্তু পরে তাদের শিক্ষা ভাতা প্রদান করা হয়নি। ওই টাকা অধ্যক্ষ আত্মসাত করেছে বলেও এমন অভিযোগ করা হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী বলেন, আমি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তাকে ঘটনা বলেছি। আশা করি তিনি শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। প্রতিষ্ঠানের সিসি ফুটেজ পরীক্ষা করলেই সব ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি। তবে তিনি আশঙ্কা করেন অধ্যক্ষ তার অপকর্ম লুকাতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ডিলেট করে দিতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসক শাস্তির ব্যবস্থা না নিলে আমরা কঠোর আন্দোলন করবো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, মঙ্গলবার সকালেও সিসি ক্যামেরা চালু দেখেছি। এখন হঠাৎ করে নষ্ট হলো কিভাবে?
তবে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই ছাত্রী আমার রুমের দরজা বাইরা বাইরি (ধাক্কা ধাক্কি) করতেছিল এবং পিয়নের কলার ধরছে। পরে আমি দুই নারী কর্মীকে দিয়ে ওরে বাইরে বের হয়ে যেতে বলি।

সিসি ফুটেজ গায়েবের বিষয় তিনি বলেন, অনেক দিন থেকেই প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা নষ্ট। নষ্ট সিসি ক্যামেরা কেন সারানো হয়নি এমন প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দিতে পারেনি।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুনের ব্যবহৃত সরকারি নম্বরে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি এডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, সরকারি খরচে টিটিসিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় সেই সিসি ক্যামেরা চালু থাকবে না এটা দুঃখজনক। আমরা ধারনা করছি উনি তার অপকর্ম লুকাতেই সিসি ক্যামেরা নষ্ট হবার কথা বলছেন। একজন ছাত্রীর গায়ে হাত তোলা অবশ্যই অন্যায়। এটা তদন্তপূর্বক ন্যায়সঙ্গত বিচার করাও দাবি জানান তিনি।

মাসুদ রেজা ফিরোজী, সাংবাদিক

Related Posts

15 Comments

  1. এইরকম শিক্ষকদের জন্যই আজ মা বাবারা তাদের ছেলে মেয়ের স্কুলে দিতের ভয় পায়,, ছি

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.