মহাকাশে এলিয়েন নিয়ে কিছু কথা

বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে মহাকাশ নিয়ে বিজ্ঞানীদের ধারণার অন্ত নেই। এমনকি সেখানে প্রাণীর অস্তিত্ব নিয়েও অনেকে সন্দিহান। অনেক গ্রহ বা উপগ্রহে প্রাণীর উপস্থিতি আছে বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন।

মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব
প্রফেসর গ্রেডির মত অনুযায়ী,মঙ্গল গ্রহে প্রাণীর উপস্থিতি থাকতে পারে। কিন্তু সেখানে অতি উন্নত বুদ্ধির কোন প্রাণীর সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই স্বল্প। প্রফেসর গ্রেডির মতে মঙ্গল গ্রহে যদি কোন প্রাণীর অনুসন্ধান পাওয়াও যায় তবে সেটি খুবই ক্ষুদ্র আকৃতির হবে। যাকে অনুজীব বলা যেতে পারে। অনেকটা ব্যাকটেরিয়ার মত।

উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্সেল মঙ্গল গ্রহের প্রাণীদের আকার এবং আকৃতি কেমন হবে তা নিয়ে একটি ধারণা দিয়েছিলেন। তার মতে মঙ্গল গ্রহের প্রাণীরা মানুষের চেয়ে লম্বা হবে।

তিনি বিজ্ঞানী গ্যালিলিওর সময়ের চেয়েও আরো পাওয়ার ফুল টেলিস্কোপ দিয়ে মঙ্গল গ্রহের আকার ও ঋতু পর্যবেক্ষণ করতেন।

তার হিসেব অনুযায়ী মঙ্গল গ্রহ যেহেতু পৃথিবীর চেয়ে আকারে ক্ষুদ্র, তাই তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর চেয়ে কম হবে। সুতারাং,সেখানে যে প্রাণীগুলো রয়েছে সেগুলো লম্বা হওয়া সম্ভব।

জুপিটারের উপগ্রহ ইউরোপায় প্রাণের অস্তিত্ব

বিজ্ঞানী মনিকা গ্রেডি মন্তব্য করেছিলেন যে, তিনি প্রায়ই নিশ্চিত যে জুপিটারের একটি চাঁদ ইউরোপায় প্রাণীর উপস্থিতি বিদ্যমান। তবে প্রানীগুলো কথা বলতে পারে না এমন কোন এলিয়েন হওয়ার প্রভাবিলিটি বেশি।

প্রফেসর মণিকা গ্রেডি বলেন যে ইউরোপার বরফের নিচেই ঐ প্রাণের উপস্থিতি থাকতে পারে। এই উপগ্রহটি বিশ কিলোমিটার ধরে বরফের আবরণে আচ্ছাদিত।

শনির উপগ্রহ এনসেলাদাসে প্রাণের অস্তিত্ব

এনসেলাদাস উপগ্রহটি পুরো বরফের আবরণে আবৃত। এই গ্রহের নিচে রয়েছে তরলের সাগর।
ধারণা করা হয় যে,বরফের আবরণের নিচের অংশটি তরল থাকার কারণে নিশ্চয়ই সে স্থানে কোন ধরণের তাপের উৎস হতে পারে।

আমাদের পৃথিবীতে সমুদ্রের তলদেশে এক ধরণের তাপ বের হওয়ার ফাটল রয়েছে। যেটির ফলে সেখানে এক প্রকারের বিক্রিয়া সংগঠিত হয়, যা জলজ প্রাণীদের জন্য খাদ্য প্রস্তুত করতে সহায়তা করে।

ইউরোপা বা এনসেলাদাস চাঁদ বা অন্য কোন পুরো বরফে আবৃত উপগ্রহেও হয়ত এই একই প্রক্রিয়া থাকতে পারে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

কিন্তু অধ্যাপক গ্রেডির মতে, পৃথিবী থেকে অন্যান্য গ্রহের দূরত্ব এতই বেশী যে সেসব গ্রহে প্রাণীর অস্তিত্ব খুঁজে পেতে আমরা কস্মিনকালেও সফল হবো কিনা তা কখনোই নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানকাল পর্যন্ত মহাকাশে যেসব সংকেত পাওয়া গেছে সেগুলোর মধ্যে কোনটিই বিশ্বস্তভাবে গ্রহণযোগ্য। এসব ধারণা ভিত্তিক।

যেভাবে মহাকাশে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান করেন বিজ্ঞানীরা

মিল্কিওয়েতে পৃথিবীর মত চল্লিশ বিলিয়ন গ্রহ থাকতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন।

বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের বাইরে প্রায় চার হাজারের মত গ্রহ শনাক্ত করেছেন। এগুলোকে এক্সো প্ল্যানেট বলে।

পৃথিবীর সকল প্রাণীদের শরীর থেকে বর্ণহীন ও গন্ধবিহীন মিথেন গ্যাস বের হয়। তেলাপোকা থেকে শুরু করে মানুষ পর্যন্ত সব প্রাণীর শরীর থেকেই মিথেন গ্যাস বের হয়।তবে আগ্নেয়গিরি থেকেও মিথেন গ্যাস বির্গমন হয়।

এক্সোপ্ল্যানেটকে পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার আদর্শ জায়গা বলে অনুমান করেন অনেক বিজ্ঞানীরা। এগুলো নিজেদের তারকারাজি থেকে অতিরিক্ত দূরেও নয় আবার অতিরিক্ত কাছেও নয়। তাই তাদের বায়ুমণ্ডল অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা নয় বরং দুইয়ের মাঝামাঝি। অর্থ্যাৎ নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া।

তাই এসব স্থানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা বেশি বলে বেশীর ভাগ বিজ্ঞানীদের ধারণা।

তাই জ্যোতির্বিদরা বিজ্ঞানীরা মহাকাশে প্রানীর অস্তিত্ব অনুসন্ধান করতে এক্সোপ্ল্যানেট নিয়েই বেশি রিচার্জ করা উচিত বলে মনে করছেন।

Related Posts

6 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.