বিজ্ঞানের দারুণ মজার এক্সপেরিমেন্ট : লেবু, বেকিং সোডা এবং ভিনেগার দিয়ে বেলুন ফোলানোর আশ্চর্য কৌশল!!!

আমরা অনেক কষ্ট করে মুখের বাতাস ঢুকিয়ে বেলুন ফোলাই। কিন্তু বিজ্ঞানের দারুণ মজার একটা এক্সপেরিমেন্ট আছে, যাতে মুখ দিয়ে কষ্ট করে মুখের বাতাস ঢুকিয়ে বেলুন ফোলাতে হবে না। এর জন্য দরকার হবে বিজ্ঞানের দারুণ মজার কৌশল!!! আর এর জন্য দরকার হবে চারটি বড়ো লেবুর রস কিংবা ভিনেগার, বেকিং সোডা বা খাওয়ার সোডা বা সোডিয়াম বাই কার্বনেট (NaHCO3), একটি প্লাস্টিকের বোতল এবং একটি প্লাস্টিকের ফানেল।

বিজ্ঞানের দারুণ মজার এক্সপেরিমেন্টটি করার সময় সবাইকে অবশ্য একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং সাবধান থাকতে হবে। প্রথমে প্লাস্টিকের বোতলে প্লাস্টিকের ফানেল দিয়ে লেবুর রস কিংবা ভিনেগার এর মধ্যে যেকোনো একটি বোতলের ভেতর সাবধানে ঢালতে হবে। এক্ষেত্রে এক লিটারের খালি বোতলে আড়াইশো এমএল অর্থাৎ এক পোয়া সমপরিমাণ লেবুর রস কিংবা ভিনেগার যেকোনো একটি নিতে হবে।

লেবুর রস কিংবা ভিনেগারে সামান্য একটু পানি মেশানো যেতে পারে। তবে বেশি পরিমাণে পানি মেশানো যাবে না। তাহলে বিজ্ঞানের দারুণ মজার এই এক্সপেরিমেন্টটি ভণ্ডুল হয়ে যাবে। তাই পানি মেশানোর ব্যাপারে খুব সাবধান থাকতে হবে। সামান্য পানি মেশানো লেবুর রস কিংবা ভিনেগার প্লাস্টিকের ফানেল দিয়ে প্লাস্টিকের বোতলে ঢালার পর বেলুনটা একটু টেনে টুনে প্রশস্ত করে নিতে হবে।

এরপর বেলুনের ভেতর প্লাস্টিকের ফানেল দিয়ে বেকিং সোডা বা খাওয়ার সোডা বা সোডিয়াম বাই কার্বনেট (NaHCO3) দুইশো গ্রাম পরিমাণ বেলুনের মধ্যে নিতে হবে। এরপর বেলুনটির মুখ প্লাস্টিকের বোতলের মুখের সাথে খুব ভালোভাবে আটকিয়ে শক্ত সুতা দিয়ে বেঁধে দিতে হবে, যাতে কোনভাবেই বাতাস ঢুকতে কিংবা বের হতে না পারে।

সুতা বাঁধার সময় খুব খেয়াল রাখতে হবে যাতে বেলুনের ভেতর থেকে বেকিং সোডা বা খাওয়ার সোডা বা সোডিয়াম বাই কার্বনেট (NaHCO3) যেন কোনভাবেই বোতলে ঢুকে না যায়। যখন প্লাস্টিকের বোতলের মুখে ভালোভাবে শক্ত সুতা দিয়ে বেলুনসহ আটকিয়ে দেয়া হবে, তারপর বেলুনের ভেতর থেকে বেকিং সোডা বা খাওয়ার সোডা বা সোডিয়াম বাই কার্বনেট (NaHCO3) প্লাস্টিকের বোতলের ভেতর সাবধানে ঢেলে দিয়ে একটু দূরে সরে যেতে হবে।

এসময় কালো সানগ্লাস পরে থাকতে হবে। বেলুনের ভেতর থেকে বেকিং সোডা বা খাওয়ার সোডা বা সোডিয়াম বাই কার্বনেট (NaHCO3) প্লাস্টিকের বোতলের ভেতর পড়ার সাথে সাথে প্রচণ্ড বিক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। লেবুর রস কিংবা ভিনেগারের মধ্যে প্রবল আলোড়ন তৈরি হবে। বুদবুদ উঠবে।

এরপর দেখা যাবে বেলুন ফুলতে শুরু করেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বেলুন ফুলে বিশাল আকার ধারণ করবে। খুব বেশি বড়ো হওয়ার আগেই বেলুনের মুখ শক্ত করে চেপে ধরে খুলে নিতে হবে। ব্যস, হয়ে গেলো বিজ্ঞানের দারুণ মজার এক্সপেরিমেন্ট লেবু, বেকিং সোডা এবং ভিনেগার দিয়ে বেলুন ফোলানো। এই চমৎকার কৌশলে সাবধানতার সাথে অনেক বেলুন ফুলিয়ে নেয়া যাবে। সেক্ষেত্রে আগে থেকেই সব বেলুন রেডি করে রাখতে হবে।

এখন প্রশ্ন হলো, কেন লেবু, বেকিং সোডা এবং ভিনেগার দিয়ে বেলুন ফোলানো যায়? এর কারণ হলো, আমরা জানি লেবুতে থাকে সাইট্রিক এসিড। আবার ভিনেগার হচ্ছে এসিটিক এসিড। লেবুর এই সাইট্রিক এসিড এবং ভিনেগারের এসিটিক এসিডের সাথে বেকিং সোডা বা খাওয়ার সোডা বা সোডিয়াম বাই কার্বনেট (NaHCO3) বিক্রিয়া করে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) গ্যাস নির্গত করে। আর এই (CO2) গ্যাসের কারণে বেলুন ফুলে ওঠে।

এই কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) হচ্ছে সেই গ্যাস যা আমরা নিঃশ্বাসের সাথে ত্যাগ করি। তাই বেলুনের ভেতর থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড একটি ভারী ও দূষিত গ্যাস। তাই এই গ্যাস নাকের কাছে নেয়ার দরকার নেই। বেলুনের ভেতর থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস দূরে ছেড়ে দেয়াই খুব ভালো হবে।

সাইফুল হক : লেখক, সম্পাদক, গবেষক।

লেবু, ভিনেগার, বেলুন, বেকিং সোডা

Related Posts

24 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.