বজ্রপাতের ঝলক আর গর্জন একই সাথে দেখা ও শোনা যায় না কেন

আমাদের পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত ঘটে চলছে নানা ধরনের ঘটনা ।ঝড়ের সময় আমরা আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে দেখি। তারপর পরই শুরু হয় বিকট শব্দের বজ্রপাত ।আমরা যদি একটু লক্ষ্য করি দেখবো বজ্রপাত এবং বিদ্যুৎ চমকানো একসাথে ঘটছে না ।কখনো কি আমরা ভেবে দেখেছি কেন এমন হয়? এর কারণ সম্পর্কে আজ আমি আপনাদের জন্য লিখছি ।মানুষ বা প্রাণী কোন একটি বস্তুকে কখন দেখতে পাই? কোন বস্তুর উপর যখন আলোক রশ্মি পড়ে তখন বস্তুটি আলোকরশ্মির কিছু অংশ শোষন করে নেয়। বাকি আলোটুকু সেই বস্তুতে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে সেই প্রতিফলিত আলো যখন আমাদের চোখে এসে পড়ে তখনই আমরা বস্তুকে দেখতে পাই ।বজ্রপাতের ক্ষেত্রে আলো কোন বস্তুতে প্রতিফলিত হয়ে আসে না বজ্রপাত নিজেই আলো উৎপাদন করে আর সেই আমাদের চোখে প্রতিফলিত হয়। তখন আমরা বজ্রপাতের ঝলক দেখতে পাই। অন্যদিকে কোন শব্দ তরঙ্গ মানুষের কানের ভেতর দিয়ে ঢুকে মস্তিষ্কের এক বিশেষ পর্দায় আঘাত হানে। তখন মস্তিষ্কের সেই পর্দায় কম্পন সৃষ্টি হয় ।সেই কোম্পনই আমরা শব্দ হিসেবে শুনি।এখন আলোর সাথে শব্দের তুলনা করা যাক ।আলোর বেগ সেকেন্ডে তিন লক্ষ কিলোমিটার ।আর শব্দের বেগ সেকেন্ডে মাত্র 340 মিটার । অর্থাৎ আলোর বেগ শব্দের বেগের প্রায় 9 লক্ষ গুণ ।তাই আলো আর শব্দ যদি দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়, তবে সেটা খরগোশ কচ্ছপের প্রতিযোগিতার থেকে ও হাস্যকর মনে হবে। ঠিক এমনই এক প্রতিযোগিতা হয় মেঘের বিদ্যুৎ চমক কিংবা বজ্রপাতের সময়।মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে বজ্র সৃষ্টি হয় আর সেইসাথে তৈরি হয় কান ফাটানো আওয়াজ। মেঘ সাধারণত মাটি থেকে দুই কিলোমিটার অথবা পাঁচ কিলোমিটার উপরে অবস্থান করে। সেখানেই মেঘে মেঘে ঘর্ষণে বজ্র আর বিকট আওয়াজ এর জন্ম হয়। ধরা যাক মাটি থেকে তিন কিলোমিটার উপরে কোন স্থানে মেঘে মেঘে লড়াই হচ্ছে সেখান থেকে বজ্রের আলো আমাদের চোখে এসে পড়তে সময় লাগবে এক লক্ষ ভাগের এক ভাগ। অর্থাৎ বজ্র ঝালক দেওয়ার সাথে সাথেই আমরা দেখে ফেলব। অন্যদিকে সেই বাজের শব্দ আমাদের কানে এসে পৌঁছাতে সময় লেগে যাবে প্রায় 9 সেকেন্ড। তাই বজ্রপাতের আলো আর কান ফাটানো বজ্রপাতের আওয়াজ একসাথে দেখা ও শোনা যায় না।

Related Posts

6 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.