প্রাকৃকিত দূর্যোগ ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ আলুচাষ, উৎপাদন কমার আশংকা

বাংলাদেশের ভৌগলিক পরিবেশ ও কৃষি জমি আলু উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। সুষম খাবারের ভেতর আলুর চাহিদা বাজারে খুবই বেশী। বাংলাদেশে আলু উৎপাদনের শীর্ষ এলাকার তালিকায় আছে মুন্সিগঞ্জ জেলা।

এই জেলাতেই আলুর সবচেয়ে বেশী ফলন হয়ে থাকে। এছাড়া সারাদেশে মুন্সিগঞ্জ জেলা থেকেই আলু সরবারহ বেশী হয়ে থাকে। শীতে আলুর বীজ রোপন করা হয়ে থাকে। সাধারণত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই কৃষি জমিতে আলুর বীজ রোপন করা শুরু হয়ে থাকে। তবে দূর্যোগকালীন আবহাওয়ার কারণে এইবছর ডিসেম্বরে আলুর উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। বীজ বপনের সময়কার ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয় হাজার হাজার হেক্টর কুষি জমি। এছাড়াও আলুর দেশ মুন্সিগঞ্জে আলুর বীজ রোপন করার সময় ঘূর্ণিঝড়ের কোবলে পড়ে আলু উৎপাদনে ব্যহত হয় কৃষকেরা।

ঘূর্ণিঝড়কালীন আলুর ক্ষেতে পানি উঠে যাওয়ায় আলুর উৎপাদন ব্যহত হয়েছে এবং পরবর্তী চারদিনের বৃষ্টিতে হেক্টর হেক্টর জমিতে আলুর চারাগুলো পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে যার কারণে কৃষকরা ব্যবকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মুন্সিগঞ্জ জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক বলেছেল সর্বমোট ১৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আলুর জমি ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল এবং এবং এর মধ্যে ১১ হাজার ৬০০ হেক্টর আলুর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আলুর দেশ মুন্সিগঞ্জে প্রতিবছর ১২ লাখ মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হয় য়ার ভেতর এবছর আলু উৎপাদনের পরিমাণ কমবে।

এছাড়াও সারাদেশেই ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে কৃষি জমিতে আলু উৎপাদনে ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কৃষকেরা। বিশিষ্ট কৃষিবিদদের মতে, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে সারোদেশেই এই বছর ক্ষতির পরিমাণ খুবই বেশী থাকায় আলু সরবারহ আগের থেকে অনেক কম দেখা গেছে। এছাড়াও বাজারে আলুর দাম আগে থেকে খুব বেশী যার কারণে ভোক্তারা আলু ক্রয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছে। ঢাকা বিভাগ ও দক্ষিণাঞ্চলেও আলুর ফলন খুবই কম এবং অধিকাংশ কৃষক এই ব্যাপারে খুবই উদাসিন। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ও বৃষ্টিপাতের কারণই প্রধাণ বলে বিবেচিত করা হচ্ছে।

এছাড়াও এ বছর মৌসুমি জলবায়ুও আলু চাষের জন্য বিপরীতে বলে আলুর বীজ বপন ও চাষাবাদে ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আলুর পাশাপাশি আমন ধান উৎপাদনেও কৃষকেরা ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হেয়েছে। মুন্সিগঞ্জ, ঢাকা ও কুমিল্লা বিভাগের কৃষকেরা বলেছেন ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে ক্ষেতে পানি উঠে তাদের একেবারেই সর্বস্বান্ত করে গেছে। হেক্টর হেক্টর জমিতে আলুর বীজ পানিতে একবারেই তলিয়ে গেছে।

ঘূর্ণিঝড়ে যশোর অঞ্চলেও আলুর চাষাবাদে ও উৎপাদনে কৃষক ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে যার মধ্যে যশোর, ঝিনাইদাহ, মাগুরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলাতে কৃষি জমিতে পানি উঠে নষ্ট হয়ে গেছে আলুর বীজ। অনেকেই নতুন করে আলুর বীজ বপন করা শুরু করেছে। কৃষিবিদদের মতে, নতুন করে আলুর বীজ বপন করলেও ক্ষতিপূরণ কমানো যাবেনা বলে মন্তব্য বিশ্লেষকদের।

সূত্র: জাগোনিউজ২৪.কম

Related Posts

7 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.