পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত পদার্থ

আসসালামু-আইলাইকুম। আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আমি আজ আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করবো পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত এক পদার্থ নিয়ে। যার নাম পোলোনিয়াম। এর মাত্র এক গ্রাম পদার্থ দিয়ে পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষকে নিমিষের মধ্যেই মেরে ফেলা সম্ভব। তো বেশি কথা না বলে চলুন শুরু করা যাক।

 

 

 

 

পোলোনিয়াম! পোলোনিয়াম মানুষের কাছে জানা সবচেয়ে বিষাক্ত পদার্থগুলোর মধ্যে একটি। যদিও এটি আমাদের এর চারপাশেই রয়েছে। পরিবেশে এর মাত্রা খুব কম রয়েছে। তবুও এটি আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। বিশেষ করে সামুদ্রিক খাবার খাওয়ার মাধ্যমে। পোলোনিয়াম পদার্থ এতটাই বিষাক্ত যে এর পরিমাণ হাইড্রোজেন সায়ানাইড থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার গুন বেশি। এর প্রধান ঝুঁকি হচ্ছে এর তীব্র তেজষ্ক্রীয়তা। যা এটিকে নিরাপদে পরিচালনা করতে সমস্যা করে। পোলোনিয়োম এবং এর যৌগ গুলি অবশ্যই একটি গ্লাভ বাক্সে হ্যান্ডেল করা উচিৎ।

আলেক্সান্ডার লিটভিনিনকো কে ২০০৬ সালে হোমোসাইডে মৃত্যুর কারণ হিসেবে এই পোলোনিয়াম বিষে খেয়েই নির্ধারিত হয়েছিল। একুশ শতকের সবচেয়ে বিধ্বংসী এবং ভয়ংকর বিষ হিসেবেই মনে করা হয় এই পোলোনিয়াম-কে। বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিকে হত্যায় এই বিষ ব্যবহৃত হয়েছে। মাত্র এক গ্রাম পদার্থ দিয়ে পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষকে নিমিষের মধ্যেই মেরে ফেলা সম্ভব। এটি শুধু বিষই নয়, তেজস্ক্রিয়ও। এর মধ্য থেকে আলফা কণা নির্গত হয় যা শরীরের কোষ ধ্বংস করে দেয়।

তামাকের ধোয়ায় পোলোনিয়োমের উপস্থিতি ১৯৬০ এর দশকের গোড়া থেকেই জানা যায়। তামাকযুক্ত পোলোনিয়াম বিশ্বব্যাপী ফুসফুস ক্যান্সারের অনেক ক্ষেত্রে অবদান রাখে। বিশ্বের কয়েকটি তামাক সংস্থা এই পদার্থ অপসারণ করার উপায় খুজেছে কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আর ফলাফল কখনই প্রকাশ পায়নি।

আরও অবাক করা ব্যাপার এই পোলোনিয়াম খাদ্য সামগ্রীতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে সি ফুডে বা সামুদ্রিক খাবারে। টক্সিক বিশেষজ্ঞরা অনুমান করে এক গ্রাম পোলোনিয়াম ৫০ মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং ৫০ মিলিয়ন মানুষকে মুহুর্তের মধ্যে অসুস্থ করে ফেলতে পারে। অতএব বলাই বাহুল্য অস্ত্র হিসেবে এটি মারাত্মক প্রাণঘাতি।

যেহেতু এই পদার্থ আমাদের আশেপাশে পাওয়া যায় সেহেতু এই পদার্থ আমাদের শরীরে যেকোনো মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারে। যদি আমাদের শরীরে তা প্রবেশ করে তাহলে বমি-বমি ভাব, ক্ষুদাহীনতা, চুলপড়া, পেটখারাপ সহ আর কিছু উপসর্গ দেখা যেতে পারে। যদি এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে কতটুকু পরিমাণ শরীরে প্রবেশ করেছে তার উপর। ডোজ যত বেশি হবে এর প্রভাবও তত বাড়বে। এবং শেষ পর্যন্ত ব্যাক্তিটি হয়ত মারা যাবে নাহয় আরোগ্য লাভ করবে। যদি আরোগ্য লাভ না করতে পারে তাহলে এক সপ্তাহ কিংবা মাসের মধ্যেই মারা যাবে। আর যারা বাঁচে তারা সুস্থ হয়ে উঠতে সপ্তাহ বা মাস খানেক সময় লাগে।

 

সূত্র- MedicalNewsToday, The Conversation, Wikipedia.

Related Posts

13 Comments

  1. ব্লগ কি?প্রত্যেকটি ব্লগি আসলে একেকটি ওয়েবসাইট। ব্লগ বা Blog শব্দটি এসেছে ইংরেজি শব্দWeblog (ওয়েবলগ) থেকে। blog মূলত ব্লগ হল ব্যাক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকা। নিজের মত করে নিজের অভিব্যক্তি ইন্টারনেটের দুনিয়ায় প্রকাশ করার মাধ্যমকেই ব্লগ বলে। আর যে আর্টিকেল বা লেখা গুলো ব্লগে পোস্ট করে এবং আপডেট করার অধিকার রাখে তাকে বলা হয় ব্। লগার

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.