পড়ার সময় ঘুম রোধের উপায়

গতকাল হয়তো কোন কারনে আপনার ঠিকমত পড়া হয়নি। সামনে পরীক্ষা। আজ পূর্ণ মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে অনেকটা পড়া একসাথে শেষ করার উদ্দেশ্যে পড়তে বসলেন। কয়েক পাতা পূর্ণ মনোযোগ এর সাথে শেষ করলেন। এরপর আপনার ক্লান্তি অনুভব হল। ভাবছেন আজ টেবিলে না, খাটে গিয়ে পড়বো। খাটে নিয়ে পড়তে শুরু করার একটু পরে হারিয়ে গেলেন ঘুমের জগতে। এভাবে আপনার পড়ার জন্য সারাদিনের নেয়া মানসিক প্রস্তুতি নিমেষে হার মেনে নিল ঘুমের কাছে।

এটি শুধু আপনার নয় বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের সমস্যা। সারাদিন দিব্যি অন্যান্য কাজ করা যায়, কিন্তু পড়তে বসলেই রাজ্যের নাম ঘুম নেমে আসে চোখের পাতায়। আজ আমরা এর কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানব:

বই পড়তে বসলে সর্বদা চোখকে বইয়ের পাতায় রাখতে হয়। প্রতিনিয়ত চোখের পেশিকে ডান থেকে বামে, বাম থেকে ডানে ঘোরাতে হয়। পঠিত বিষয় বস্তু দ্বারা কি বোঝাচ্ছে তা অনুধাবন করতে হয়। এছাড়া পাঠ্যপুস্তক পড়লে তা ভবিষ্যতে মনে রাখতে হয়। এভাবে একসাথে অনেকগুলো কার্যসম্পাদনের ফলে চোখ ও মস্তিষ্ক উভয় ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তখন প্রয়োজন হয় বিশ্রামের আর শ্রেষ্ঠ বিশ্রাম হলো ঘুম। ফলে চোখের পাতা ঘুমে ভারি হয়ে আসে এবং আমরা হারিয়ে যাই ঘুমের মাঝে।

ঘুমের পিছনে আরও একটি কারণ রয়েছে, সেটি হলো অনেকেই পড়ার জন্য আরামদায়ক স্থান নির্বাচন করে। কেউ শুয়ে শুয়ে পড়ে কেউ বা বিশ্রামের ভঙ্গিতে পড়ে। শরীরকে যখন কোনো আরামদায়ক অনুভূতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় তখন মস্তিষ্ক ধরে নেয় যে এটি বিশ্রামের সময়। কিন্তু সেই সময় যখন মানুষ পড়ার মতো কঠিন কাজ করে তখন মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্লান্তিভাব হয়।

তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় কি? সামান্য কিছু বিষয় মেনে চললেই এই সমস্যা থেকে পরিত্রান লাভ করা সম্ভব। নিম্নে তার কয়েকটি উল্লেখ করা হলো:

পড়ার ক্ষেত্রে টেবিল ব্যবহার :

পড়ার ক্ষেত্রে টেবিল ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। অনেকেই খাটে বসে পড়াকে সুবিধাজনক মনে করেন। আরামদায়ক ভঙ্গিতে পড়লে আমাদের মস্তিষ্ক ধরে নেয় এটা ঘুমের সময়। তাই পড়ার জন্য টেবিল ও শক্ত কাঠের চেয়ার রাখতে হবে। মনোযোগ বিঘ্ন করে এমন জিনিস দূরে রাখতে হবে।

পড়ার ঘর আলোকিত রাখা:

অনেকেরই অভ্যাস পড়ার টেবিলে ল্যাম্প জ্বালিয়ে পড়ার। এতে হয়ত বইয়ের পড়া স্পষ্ট দেখা যায়। এ অবস্থায় ঘরে বেশিরভাগ অংশই অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে যা একটি আরামদায়ক পরিবেশের সৃষ্টি করে। তখন মস্তিষ্ক প্রভাবিত করে বিশ্রামের জন্য। এজন্য পড়ার সময় প্রয়োজন এর বাহিরেও ঘর আলোকিত রাখা অত্যন্ত জরুরি।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন:

পানি পানের প্রয়োজনীয়তা অন্যান্য সকল ক্ষেত্রের মতো পড়ার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত জরুরী। এতে আপনার মস্তিষ্ক
আদ্র থাকবে এবং পড়া মনে রাখতে সুবিধা হবে।

হালকা খাবার খান, ভারি খাবার বর্জন করুন:

ভারি খাবার খাওয়ার পর আলসেমি বোধ হয়, বিশ্রামের ইচ্ছা জাগে। ফলে পড়ার প্রতি মনোযোগ বিঘ্ন হয়। তাই সর্বদা পরিমিত পরিমাণে খাবার খেয়ে পড়তে বসাই উত্তম।

রাতে প্রয়োজনীয় পরিমাণে ঘুমান:

রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়া দিনে ঘুম আসার একটি অন্যতম কারণ। তাই রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান, তাহলে আর পড়ার সময় রাতের ঘুম আক্রমণ করবে না।

Related Posts

15 Comments

  1. আপনি পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েন নাকি, তাহলে এটা আপনার কাজে দেবে

    1. হ্যাঁ,,,,আগে ঘুমিয়েই পড়তাম,,, এগুলো মেনে চললে এখন আর হয় না,,,

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.