নিজ অবস্থানে সবাই স্বর্গীয় সুখ লাভ করে!

এক গ্রামে ছিল ধামু একটা ছাগল। তার মালিক ছিল বসির মিয়া। বসির মিয়া তার ছাগলের খুব যত্ন নিত। সে তার ছাগলকে বেঁধে রাখত না। ছাগল সারা গ্রামে, গ্রামের মাঠে ঘুরে খাবার খেত। তবে বসির মিয়া ধামুকে সবসময় খাবার দিত। সবসময় খাবার মানে ঠিক সবসময় না। সঠিক সময়ে খাবার দিত। সে ধামুকে সকালে, দুপুরে এবং রাতে সাধ্যমত খাবার দিত।

কিন্তু ধামু ছিল খুবই ধান্দাবাজ একটা ছাগল। সে এতো যত্ন পেত, তবুও যেন তার কোনো যত্ন কেউ নেয় না এমন ভাব করত। সে গ্রামের মাঠে গিয়ে গ্রামের পাশের জঙ্গলের দিকে হরিণদেরকে তাকিয়ে দেখত। আর মনে মনে ভাবত, “কি সুন্দর তাদের জীবন! আমিও যদি তাদের মতো এরকম স্বাধীন জীবন পেতাম, তাহলে কতই না মজা হত! কেউ আমাকে আর কচি কচি ঘাস খেতে বাঁধা দিত না।”

“ওই শমসের আলীর গরুটা এখানে আসে। তারপর সব ঘাস খেয়ে ফেলে। আমি এসে শুধু তার এঁটো ঘাসগুলো খাই। মাঝে মাঝে তো শমসের আলি এখানে এসে টয়লেট ছেড়ে যায়। কি দুর্গন্ধ বের হয় তখন! আমি এতো দুর্গন্ধের মাঝে ভালো করে ঘাস খেতেই পারি না। আর আমার মালিক আমাকে শুধু ৩ বেলা খাবার দেয়। সবসময় খাবার দিলে কি হয়?”

“কিন্তু আমার বাচ্চাদেরকে আমার মালিক সবসময় খেতে দেয়। আমাকেও তো খেতে দিতে পারে নাকি? সেটা তো কখনোই দিবে না। আর আমার দুধ দোহনের বেলায় আমার মালিক এতোটুকুও কৃপণতা করে না। এসব বলতে গেলে তো বলবে, সে গরিব লোক। তার আর্থিক অবস্থা খুবই কম। ফলে আমাকে সারাজীবন এই কষ্টেই জীবন কাটাতে হবে। ওইদিকে ওই বনের হরিনেরা কি আরামেই না দিন কাটাচ্ছে!”

এসব ভাবতে ভাবতে সে খুব রাগান্বিত হয়ে গেলো। মাঠের শেষের দিকে জঙ্গলের কাছে গেলো হরিণদের আনন্দময় খেলা দেখতে। তারা অনেক আনন্দ করে খেলা করছে। এই খেলা দেখে ধামুরও খুব খেলা করতে মন চাইলো। সে হরিণদের প্রতি হিংসা করতে লাগলো।

জঙ্গলের পাশ দিয়েই যাচ্ছিল একটা শিয়াল। সে ছাগলের দাঁড়িয়ে থাকা দেখে তাকে প্রশ্ন করলো, কেন সে এভাবে দাঁড়িয়ে আছে। হিংসুটে ধামু শিয়ালটিকে তার মনের কথা খুলে বলল। এসব কথা শুনে শিয়াল বলল, “দাড়াও! এখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা কর। দেখতে পাবে এই আনন্দময় পরিবেশ কি করে আতংক আর দুঃখের পরিবেশে রূপ নেয়।” এই কথা বলে শিয়াল চলে গেলো।

ধামু শিয়ালের কথার মাথা কাল্লা কিছুই খুঁজে পেলো না। কিন্তু সে শিয়ালের কথামতো সেখানে দাঁড়িয়ে থাকলো।
নদীতে তখন স্রোত একটু জোরে বইতে শুরু করেছে। ধামু নদীর ওপারে এখনো তাকিয়ে আছে। হরিণেরা এখনো খেলা করছে। হঠাৎ, সেখানে বনের রাজা সিংহের আগমন ঘটে। ধামু এটা দেখে নদীর এপার থেকেই ভয় পেয়ে যায়।

নদীর ওপারে তখন হরিণদের পালানোর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সিংহও তাদের ধাওয়া করছে। একটু পরেই সিংহ একটা হরিণের বাচ্চাকে শিকার করে তার ডেরায় নিয়ে গেলো। যার বাচ্চাকে নিয়ে গেলো, সে সহ সবাই তখন কান্নার রোলে ভেসে পড়ছে। চারদিকে শুধু আতঙ্ক। এতো সুন্দর আনন্দময় পরিবেশ হঠাৎই দুঃখের পরিবেশে রুপান্তর হয়ে গেলো।

ধামু লক্ষ্য করলো, শিয়ালের কথা একেবারে হুবহু মিলে যাচ্ছে।
এসব দেখে ধামু তার ভুল বুঝতে পারলো। সে ভাবল, তার মালিকের কাছেই সে নিরাপদ আছে। তার দরকার নেই হরিণদের মতো ওরকম আনন্দের। সে এখন গ্রামেই সবার সাথে থেকে আনন্দে থাকার চেষ্টা করবে। আর কখনোই সে হিংসা বা ধান্দা করবে না।

সে তার ভুল থেকে বুঝতে পারলো,
“নিজ অবস্থানেই সবাই স্বর্গীয় সুখ লাভ করে!”

Related Posts

15 Comments

  1. —#গল্প টা আপনি শেষ পর্যন্ত পড়ুন কান্না আটকে রাখতে পারবেন না বিশ্বাস না হলে পড়ে দেকুন —–
    #নামঃ_বোনের_অবহেলা
    আপু ১০টা টাকা দে তো।
    – কেন?
    – স্কুল যামু।
    – টাকা নাই এখন যা।
    – এমন করিস কেন আপু দে না প্লিজ।
    – বলছি না, নাই এখন ঘ্যানর ঘ্যানর করিস না তো।
    – আপু দিবি কিনা? ( ঠাস)
    – এই নে দিলাম, হইছে এখন?
    – উহুঁ উহুঁ। ..
    কাদতেঁ কাদতেঁ বেরিয়ে গেল ঘর থেকে সোহেল ।
    এই হলো তামান্না আর ওর ভাই। তামান্না পরে
    ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে আর সোহেল পরে ক্লাস ফাইভে। সোহেল সবসময় ওর আপুর সাথে মেলামেশার চেষ্টা করে কিন্তু ওর আপু ওর সাথে এমন ব্যবহার করে। দুজনে সাপ বেজির মতো,, সোহেল ওর আপুর কাছে থাকতে চাইলেও ওর আপু ওকে ঝামেলা মনে করে দূরে রাখে।
    .
    স্কুলে যাওয়ার সময়, #সোহেল ভাবলো আপু তো আমার স্কুলের সামনে দিয়েই কলেজে যায়।
    আমার স্কুলের সামনে দিয়েই কলেজে যাওয়ার রাস্তা, তাই আমি আপুর সাথে যাব।
    সোহেল ওর আপুর ঘরে গিয়ে দেখে ওর আপু রেডি
    হয়ে গেছে কলেজে যাবার জন্য।
    .
    – আপু আপু আমাকে সঙ্গে নিয়ে যা।
    – একা যেতে পারিস না।
    – এতো গাড়ির মধ্যে একা যেতে ভয় লাগে
    তোর সাথে যাব।
    – আচ্ছা নিয়ে যাব, রাস্তায় বেরিয়ে এটা ওটা বাহানা ধরবি তো,সকালের মতো আরেক টা দিব।
    – আচ্ছা চুপ করে থাকবো।
    .
    তারপর সোহেল আর তামান্না বেরিয়ে পড়ে।
    দুজনে চুপচাপ রাস্তা দিয়ে হাটছে।
    তবুও ওদের মাঝে প্রায় ১ হাত ফাকা জায়গা
    বিরাজ করছে। সোহেলের অনেক ইচ্ছে করছে আপুর হাতটা ধরে রাস্তায় চলতে কিন্তু সোহেল ১ হাত ফাক
    দিয়ে যাচ্ছে। আর আপুর কাছে যেতে ভয়
    পাচ্ছে,যদি মাইর দেয়। .
    ওর আপু তো ওকে একটুও ভালবাসে না। সবসময় মারধোর করে। তাই এখন সোহেলের মনে
    সবসময় এক ভয় কাজ করে,,, সেটা হলো আপুর কাছে যাওয়া যাবে না, নয়তো মার খেতে হবে।
    তখন সোহেল বলে,,,
    – আপু একটু কোলে নে না।
    – কিইইইই?? ( চোখ বড় বড় করে রাগি লুক
    নিয়ে তাকালো সোহেলের দিকে)
    – না,,, কিছু বলি নাই।
    .
    সোহেল ভয় পেয়ে আরও একটু দূরে সড়ে যায়। তারপর সোহেল ওর স্কুলে চলে যায় আর ওর আপু
    একটু শান্তি পায়। মনে মনে বলতে থাকে আপদ গেছে।
    . এরপর সারাদিন সোহেল স্কুলে আর তামান্না কলেজে কাটায়। এভাবেই দিন চলছে দুজনের।
    সোহেল পাচ্ছে শুধু ওর আপুর অবহেলা। কোনো সময় একটু ভালবেসে আদর করেনি ওকে।
    সবসময় বকাঝকা আর মেরেই সময় কাটায়
    বাড়িতে ওর আপু।
    . বিকেল ৪ টার ছুটি হয় সোহেলের স্কুল।
    ওর বাসার আশেপাশে ওর কোনো বন্ধু নেই।
    তাই স্কুল ছুটি হওয়ার পর সোহেল

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.