জেনে নিন চল্লিশের পর তারুণ্যদীপ্ত থাকার কিছু গোপন মন্ত্র।

সেদিন সকালে কোম্পানীঘাট কাঁচামালের আড়তে গিয়েছিলাম কিছু তাজা ফল ক্রয়ের উদ্দেশ্যে। আমার এক দূর সম্পর্কের চাচার সেখানে ফলের আড়ত আছে। যিনি বিভিন্ন মৌসুমি ফল কেনা-বেচা করে থাকেন। আমি তার ওখানেই গেলাম। চাচা আমাকে দেখে খুশিতে আত্মহারা হবার যোগাড়। একজনকে বললেন একটি চেয়ার দিতে। আরেকজনকে নাস্তা আনতে পাঠিয়ে দিলেন। আমি তাকে যতই বলি, “চাচা আমি নাস্তা করে এসেছি, আপনি ব্যস্ত হবেন না”। সে যেন ততই বেশি ব্যাস্ত হয়ে উঠেন আমাকে নাস্তা খাওয়ানোর জন্য। তার এই ব্যতি ব্যস্ততা পাশের আড়ত মালিকের নজরে পড়ে। তিনি জানতে চান আমার সম্পর্কে। চাচা বলেন –

ঃ “ও হচ্ছে আমার ভাতিজা। কাছেই থাকে, কিন্তু আমার এখানে আসার সময় পায়না। খুব ব্যস্ত থাকে আমার ভাতিজা। এই দেখেন আজকে কত দিন পড়ে এলো!”

ঃ “ভাতিজার বয়স কত? বিয়ে করিয়েছেন?” হঠাৎ লোকটির প্রশ্ন।

চাচা একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলেন –

ঃ “সেদিনের ছেলে, বয়স আর কত হবে, এই ৩০/ ৩২ হবে হয়তো। বিয়ে অবশ্য করিয়েছি কিছুদিন আগে।”

চাচার কথা শুনে আমি তো আকাশ থেকে পড়ার মত অবস্থা। বলে কি চাচায়? আমি বিয়ে করেছি এক যুগ পার হয়ে গেছে! আর উনি বলছেন কিছুদিন আগে!! আর লোকটিও দেখি তাই বিশ্বাস করে বসে আছে।

কয়দিন আগেও লোকে আমাকে দেখে বয়স কেবল ত্রিশোর্ধ বলে অনুমান করতো। কিন্তু আমি ৪০ পেরিয়েছি আরোও কয়েক বছর আগেই। তবুও লোকে প্রায়শই আমার ফিটনেস ও তারুণ্যের প্রশংসা করে থাকেন। আমার সহকর্মীরা এখনোও অনেকেই আমার দিকে ইর্ষার নজরে তাকায়। আমি মনে মনে হাসি আর তাদের ইর্ষা উপভোগ করি।

এখন আসুন মূল কথায়। ৪০ এর পর যদি তারুণ্যদীপ্ত থাকতে চান তাহলে নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করুনঃ

১. সবসময় হাসিখুশী থাকুন।

২. খেলাধুলা ও ব্যয়াম করুন। নিদেন পক্ষে প্রতিদিন অন্তত ২/১ কিমি রাস্তা হাঁটুন। ২০/৩০ টাকার রিক্সা ভাড়ার পথ পায়ে হাটে যান। শরীর এবং মানিব্যাগ দুটোই ভাল থাকবে।

৩. প্রিয়জনকে ভালোবাসুন, মন প্রফুল্ল থাকবে।

৪. যথাসম্ভব তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন। মাছ ও সবজি খান প্রচুর। আর সেই সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

৫. চর্বিযুক্ত মাংস, ডিম খাবেন তবে পরিমিত পরিমানে। কিন্তু রুটি, ভাত, আলু এই সবের সাথে চর্বিযুক্ত মাংস এবং ডিম, মাছ এইগুলো খাবেন না। যখনি শর্করার সাথে এইসব খাবার খাবেন তখনি সমস্যা সৃস্টি করবে।

৬. ভাত খাওয়া কমিয়ে দেন, মানে শর্করা জাতিয় খাবার কমিয়ে দেন।

৭. বাদাম, মাখন, দুধ এইসব নিয়মত ও পরিমিত মাত্রায় খাবেন।

৮. সকাল সকাল নাস্তা সারুন। নাস্তায় ভরপেট আহার করুন কোনোও সমস্যা নেই। দুপুরের খাবার ২টার পূর্বে গ্রহণ করুন। তবে পেট পূরে খাবেন না। রাত ৮ টার মধ্যে রাতের খাবার সেরে ফেলতে চেষ্টা করুন। আর রাতে অবশ্যই অর্ধ পেট আহার করুন। রাতে ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন। চেষ্টা করুন রাতে কাঁচা শাক সবজি, ফল মূল খেতে।

৯. রাত ১০ টা – ২ টা পর্যন্ত সবচেয়ে উত্তম সময় ঘুমানোর জন্য। তাই ১০ টার মধ্যে বিছানায় যেতে চেষ্টা করবেন।

১০. প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করতে হবে। তাই, ফজরের নামাজ সময় মত আদায় করুন।

১১. দুপুরে খাওয়ার পর বিশ্রাম নিন কিন্তু ঘুমাবেন না।

১২. সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন। এতে ওমেগা ৩ আছে, যা মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।

১৩. ইদানিং ম্যাক্সিমাম সয়াবিন তেল ভেজালযুক্ত। তাই অর্গানিক অলিভ অয়েল খান। বাসায় বলুন এটা দিয়ে তরকারি রান্না করতে। বাঁচতে হলে সয়াবিন তেল এভয়েড করতে হবে।

১৪. অবশ্যই সুস্থ ও সুন্দর দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রাখুন।

ভাল থাকুন সকলেই। আল্লাহ্‌ হাফিজ।

Related Posts

9 Comments

    1. শুধু গুড, নাইস, এরকম কমেন্ট করে কি লাভ? গঠন মূলক কিছু বলেন।

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.