গল্পঃ সমুখে যাত্রা (পর্ব-১)

শীতের সকাল।প্রচন্ড ঠান্ডা যেমন তেমনি কুয়াশায় আচ্ছন্ন পুরো ঢাকা শহর। সায়েদাবাদ বাস ষ্ট্যান্ড থেকে আফছার যাবে তার ফুফাতো ভাইয়ের কাছে।ফুফাতো ভাই বশির একটা বাসার দারোয়ানের চাকুরি করে।আফছার গ্রামের ছেলে।খুবই সহজ সরল।তবে অসম্ভব মেধাবী ছেলে। বি এস সি পাশ করে ঢাকায় এসেছে চাকুরি করার জন্য।এ ভুবনে এক ফুফু ছাড়া তার বাবা মা কেউ বেচেঁ নেই। সেই তাকে লালন পালন করেছে নিজের সন্তানের মত।

বাসষ্ট্যান্ড থেকে আফছার এদিক ওদিক তাকাতে লাগল।অচেনা শহর। জীবনের এই প্রথম আসা শহরে।গ্রামের পরিবেশে বড় হয়েছে।তাই শহরের মত এত বড় বড় দালান কোঠা সে কখনো দেখেনি।যদিও আফছারের পৃথিবী ছিল তার নিজ গ্রাম পর্যন্ত সীমাবদ্ধ।তাই এই শহরকে তার কাছে খুবই অদ্ভুত মনে হল।

আফছার হাটতে হাটতে সামনে এগুচ্ছে একটা রিক্সা নেয়ার জন্য।ফুফাতো ভাই বশির থাকে মগবাজার।আফছার সেখানে যাবে।এসময় দুইজন লোক এসে বলে ভাই কিছু মনে করবেন না আপনার কাছে কি একটা কয়েন হবে মানে পয়সা।আফসার ফকির মনে করে বলল,জি হবে।এই বলে সে পকেট থেকে একটা দু টাকার পয়সা বের করে দিলো। আফছার সামনের দিকে রওয়ানা দিল।এসময় লোক দুটি বলল,ভাই টচ হওয়ার পরে যান।আফছার বুজতে না পেরে বলল,কিসের টচ।উওরে লোক দুটি বলল একটু পরে বুঝবেন।

টচ শেষ হওয়ার পর বলল,ভাই আমরা আপনার গলার রুপার চেন ও আপনার মানিব্যাগ টচ করেছি। যে যে যেটা জিতেছে তা দিয়ে চুপচাপ চলে যান যদি জীবনের মায়া থাকে। একথা শুনে আফসার ভয় পেয়ে গেলে।আর টচ করে কেউ এভাবে ছিনতাই করে এটা তার জানা ছিল না।কোন উপায় না পেয়ে সব কিছু দিয়ে সামনের দিকে হাটা দিল।অচেনা জায়গা সে কিভাবে মগবাজার পর্যন্ত যাবে।কিন্তু কি আর করবে অবশেষে লোক জনকে জিগ্গেস করতে করতে অবশেষে ফুফাতো ভাই বশিরের কাছ এসে পৌছল।

বশির আফসারকে দেখে জিগ্গেস করল কিরে তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন। আর এই শীতের ভেতর তুই তো ঘেমে একাকার হয়ে আছিস। ব্যাপারটা কি বলতো।পরে সমস্ত ঘটনা খুলে বলল।প্রথম শহরে এসে আফসারের এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা হল।টচ করে সাধারনত খেলাধূলায়।কিন্তু আজ কাল দেখা যায় টচ করে ছিনতাই ও হয়।আজব শহর আর সব আজব  এখানের মানুষরা।

সিঁড়ির কাছে ছোট্ট একটা ঘর দিয়েছে বশিরকে থাকার জন্য।সেখানে নিজেই নিজের রান্না করে খায় বশির।বেতন কম কি করবে।বাড়ির মালিক একজন বড় মাপের উকিল।অনেক টাকা পয়সা তার।কিন্তু বেতন বাড়াতে চায় না।ওনার সাফ কথা এ বেতনে ইচ্ছা হলে কর না হলে অন্য ব্যবস্থা কর।আমি বেতন বাড়াবো না।অনেকটা বাধ্য হয়ে থাকতে হচ্ছ।কারন চাকুরি হারালে তা পেতে একেবারে নাভিঃশ্বাস অবস্থা।

আফছারকে বশির বলল,যা হওয়ার হয়েছে চিন্তা করে লাভ নেই।এখন তুই নাস্তা করে একটু বিশ্রাম নে।আগামী কাল উকিল সাহেব কে বলে দেখি তোর জন্য কেন ব্যবস্থা করতে পারি কিনা।আফছার বাসের ভিতর ঘুমাতে পারেনি।তাই নাস্তা করে বিছানায় পিঠ এলিয়ে দেয়ার সাথে সাথেই সে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল।

Related Posts

12 Comments

  1. আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু
    আপনার একটা সাসক্রাইব আর একটা লাইক আমার জন্য অনুপ্রেরণা
    Please support me🙂

    Youtube Channel: https://www.youtube.com/channel/UCcrbrQxUzsavUjfXMgrsM6Q

    Facebook page: https://www.facebook.com/107324621876693/posts/107963605146128/?app=fbl

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.