এশার নামাজ কত দেরিতে পড়া যাবে?

সারাদিনের ক্লান্তির পর এশার নামাজ পড়তে অলসতা লাগে। তাই প্রশ্ন জাগে – কত দেরিতে এশার নামাজ পড়া যাবে?

কারণ ক্লান্তি দূর করে সতেজ হয়ে আমরা এশার নামাজ পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় জামায়াত মিস হয়, রাত গভীর হয়।

এ জন্য এশার নামাজ কত দেরিতে পড়া যাবে তা জানা জরুরি। যাতে আমরা সঠিক সময়ে এশার নামাজ সঠিকভাবে আদায় করতে পারি।

এশার নামাজ কি?

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে এশার নামাজ শেষ নামাজ। ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব ও এশা থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শুরু হয়।

এশার নামাজ প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নারী ও পুরুষের জন্য ফরজ। যদি কোন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় এশার সালাত ত্যাগ করে তবে সে গুনাহগার বলে বিবেচিত হবে।

অনেক ইসলামী পন্ডিত অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে এশার সালাত এড়িয়ে যায় সে কুফর করে।

কিন্তু অপারগতা থাকলে হলে গুনা হবে না, যেমন অজ্ঞান হওয়া, পাগল হওয়া, নারীর ঋতুস্রাব ইত্যাদি।

এশার নামাজ কিভাবে পড়তে হয় ?

এশার নামায প্রথমে কিবলামুখী হয়ে সানা ও সূরা ফাতেহা পাঠ করে শুরু করতে হবে। সূরা ফাতিহা অন্য সূরা বা কুরআনের অন্য কোন আয়াতের সাথে পড়তে হবে। রুকু ও সিজদা করার পর দাঁড়িয়ে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়তে হবে।

এভাবে এশার চার রাকাত পড়তে হবে। এশার নামাজ মসজিদে জামাতে আদায় করা ওয়াজিব। পুরুষরা এশার নামাজ মসজিদে কমিউনিটিতে আদায় করবেন।

আর মহিলারা মসজিদে যেতে পারলে তারাও এশার নামাজ মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করবে।

তবে মসজিদে সুযোগ না থাকলে তারা একা বাড়িতেই পড়াশোনা করবে। এটাই তাদের জন্য ভালো।

যদি আমি এশার জামাত মিস করি তবে আমাকে প্রথমে চার রাকাত ফরজ আদায় করতে হবে। দুই রাকাত সুন্নত শেষ করে এক রাকাত বিতর পড়তে হবে।

এশার নামাজের সময় কখন?

মাগরিবের ওয়াক্তের পর এশার নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়। সূর্যাস্তের দেড় ঘণ্টা পর এশার নামাজ শুরু হয়।

রাত শুরু হয় যখন সারা পৃথিবী অন্ধকারে ঢেকে যায়। আর এশার নামায যেহেতু রাতের নামায তাই রাত শুরু হওয়ার পর পড়তে হবে।

মুসলমানরা দিনের প্রথম ভাগে ফজরের নামাজ, দিনের শেষ ভাগে মাগরিবের নামাজ এবং রাতে এশার নামাজ আদায় করে।

মাগরিবের সময় পশ্চিম আকাশে লাল আলো দেখা যায়; লাল বাতি নিভে যাওয়ার পর এশার নামাজের সময় শুরু হয়।

এশার নামাজ কত দেরিতে পড়তে পারবেন?

গভীর রাতে এশার নামাজ পড়তে পারেন। অনেক ইসলামী পন্ডিত বলেছেন মধ্যরাত হল এশার নামাজ পড়ার সর্বোত্তম সময়।

কেননা – রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম – একটি হাদিসে বলেছেন, আমি যদি দুর্বল ও অসুস্থদের ভয় না করতাম, তবে আমি মধ্যরাতে এশার নামায পড়ার নির্দেশ দিতাম।

তাই গভীর রাত পর্যন্ত নামাজ পড়তে পারেন। কোনো কারণে মধ্যরাতে এশার নামাজ পড়া সম্ভব না হলেও রাতের শেষ প্রহরে আদায় করা যাবে।

অর্থাৎ ফজরের নামাজের আগে এশার নামাজ আদায় করতে পারেন। যাইহোক, এটি একটি নিয়ম তান্ত্রিক কর্ম করা যাবে না.

তবে যেহেতু মসজিদে এশার নামায প্রথম রাতে জামাতে আদায় করা হয়, তাই সবার সাথে আদায় করা উত্তম।

কারণ এশার নামাজ ফরজ, এশার নামাজ জামাতে আদায় করা আরেকটি ফরজ। কেউ কোনো কারণে জামায়াত মিস করলে ঠিক আছে; সে ব্যক্তি মধ্যরাতে বা শেষ রাতে এশা পড়তে পারে।

সারসংক্ষেপ

এশার নামাজ কত দেরিতে পড়তে পারবেন? মাগরিবের পর থেকে এশার নামাজ শুরু হয়, অর্থাৎ পশ্চিম আকাশে সূর্যাস্তের পর থেকে এশার নামাজের সময় শুরু হয়।

এশার নামাজ জামাতে আদায় করা উত্তম। জামাত মিস হলে মধ্যরাতে এশার নামাজ পড়া যাবে। কোনো কারণে মাঝরাতে এশার নামায না পড়লে ব্যক্তি ফজরের আগে এশার নামায পড়তে পারে।

Related Posts

2 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.