একজন প্রফেশনাল আর্টিকেল লেখক হতে চাইলে নিচের বিষয়গুলো আগে শিখে নিন।

আপনি যদি নিজেকে একজন প্রফেশনাল আর্টিকেল লেখক হিসেবে দেখতে চান তাহলে একটি পূর্ণাঙ্গ আর্টিকেল লেখার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখতেই হবে। আসুন জেনে নিই সেই বিষয়গুলো-

নিজেকে লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন অনেকেই মনে লালন করে থাকেন। এ জন্য অনেকে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ে করে শেখে আবার অনেকে নিজ উদ্যোগেই শেখার চেষ্টা করে। লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পড়াশোনা করতেই হয়। নিজেকে লেখক বানাতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াও প্রচুর পড়াশোনা করা দরকার। এতে নিজের জানার পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে লেখার ক্ষেত্রেও কাজে লাগে। তবে মোটামুটি মানের একজন লেখক হয়ে উঠতেও প্রাথমিক কিছু জ্ঞান থাকা উচিত। সেই প্রাথমিক জ্ঞানসমূহই আজকের আলোচ্য বিষয়-

১। বিষয় নির্বাচন করা।
২। গভীরভাবে তথ্য অনুসন্ধান বা গবেষণা করা।
৩। বাক্যের গঠনশৈলী।
৪। প্রচুর অধ্যাবসায় বা বেশি বেশি পড়ার অভ্যাস তৈরি।
৫। লেখার অভ্যাস তৈরি করা
৬। অতিরিক্ত চাকচিক্য পরিহার করা।
৭। আপনার লেখাটা রিভিশন করুন।

১। বিষয় নির্বাচন করাঃ

আর্টিকেল লেখার প্রথম জরুরি কাজটি হলো একটি বিষয়বস্তু নির্বাচন করা। অর্থাৎ, আপনি যা লিখবেন তা আগে চিন্তা করা। অনেকেই আছেন যারা এই জায়গাটিতে মারাত্মক ভুলটি করে। লেখা শুরু করার আগে নিজের দক্ষতা আর পছন্দের উপর জোর দিতে হবে। আপনার যে বিষয়টি ভাল লাগে সে বিষয়টিতেই আপনি লিখুন। অর্থাৎ, আপনার যে বিষয়ের প্রতি প্রবল আকর্ষণ সে বিষয়ে লেখাই আপনার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ।

২। গভীরভাবে তথ্য অনুসন্ধান বা গবেষণা করাঃ

কোনো একটি বিষয়ে লেখা শুরু করার জন্য পর্যাপ্ত গবেষণা দরকার। আর্টিকেল লেখায় গবেষণা বলতে লেখার নির্বাচিত বিষয়ের উপর সঠিক জ্ঞান আহরণ করাকে বুঝায়। যে বিষয়ে যত বেশি তথ্য ও উপাত্ত যুক্ত করা যায় সে বিষয়ের লেখুনির গ্রহনযোগ্যতা বেশি। মনে রাখতে হবে, সার্বজনীন ও অধিক তথ্য বহুল লেখার মান সর্বমহলে অনেক বেশি। ভুল তথ্য দেয়া যাবে না। উক্ত বিষয়ের উপর অগাধ গবেষণার বিকল্প আর দ্বিতীয়টি নেই।

৩। বাক্যের গঠনশৈলীঃ

গঠনগত দিক থেকে সুন্দর, সুস্পষ্ট ও শ্রুতিমধুর বাক্য একটি সুন্দর ও গ্রহনযোগ্য আর্টিকেল লেখার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। লেখায় সৌন্দর্য আসে বাক্যের গঠনে৷ পাঠকের সহজ পঠনের কথা ভেবেই আপনাকে সহজ সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় আর্টিকেল লিখতে হবে। লিখলে বিষয়টি লেখকের কাছে সহজ হবে। আপনি নিজেকেই একজন পাঠক ভাবুন এবং আপনার লেখাটা পড়ুন। তাহলে আপনি পাঠকের মনোভাব ও চাহিদা বুঝবেন। পাঠকের কথা ভেবে লিখলেই লেখায় গ্রহনযোগ্যতা আসবে।

আর্টিকেল লেখা শুরু করার আগেই আর্টিকেলের বাক্য গঠনে মনোযোগী হউন। সহজ, সরল, সাবলীল ও চলতি ভাষা ব্যবহার করে বাক্যগুলে লিখুন। পাঠকের শ্রেণীর কথা ভাবুন। যাতে সকল শ্রেনির পাঠক আপনার লেখাটি স্বাচ্ছন্দ্যে পড়তে পারে।

৪। প্রচুর অধ্যাবসায় বা বেশি বেশি পড়ার অভ্যাস তৈরিঃ

বেশি বেশি পড়া ও বার বার পড়া একজন ভাল মানের প্রফেশনাল লেখকের গুণ। আপনিও ভালো লেখক হতে চাইলে এই বৈশিষ্টগুলোর সমন্বয় থাকতে হবে। আপনার লেখা আপনার কাছে যেমন দামী তেমনি পাঠকের কাছেও দামী ও মানসম্মত করে তুলতে হবে। এর জন্য আপনাকে প্রচুর পড়তে হবে।

৫। লেখার অভ্যাস তৈরি করাঃ

‘ক্যাথরিন ম্যান্সফিল্ড’ একজন প্রফেশনাল আর্টিকেল লেখন বলেছিলেন, ‘অতীতে তাকিয়ে আমি ভাবি, আমি সবসময় লিখছি। যদিও অর্থহীন কথাবার্তা, কিন্তু কিছু না লেখার থেকে অর্থহীন কথাবার্তা লেখাও অনেক ভালো।’ এ কথাটির মানে হলো, প্রতিদিনই আপনি কিছু না কিছু লেখার অভ্যাস তৈরি করবেন৷ এতে সহজেই যেকোনো বিষয়ে একজন ভালো মানের লেখকের মতো আর্টিকেল লেখা যায়। তাই, একজন ভাল মানের লেখক হতে হলে বেশি বেশি লেখার অভ্যাস গড়ে তুলতেই হবে।

৬। অতিরিক্ত চাকচিক্য পরিহার করুনঃ

লেখায় অতিরঞ্জিত কিছু আনা অনুচিত। পাঠকের মন জয় করতে অতিরঞ্জিত কোনো লেখা লিখবেন না। অতিরঞ্জিত লেখা লেখকের জন্য ‘সাইড ইফেক্ট’ ছাড়া ভালো কিছু নয়।অতিরিক্ত চাকচিক্যতা নয়, একটি বিষয়কে মানুষের কাছে উপস্থাপন করুন সাবলীল ভাষায় যাতে মানুষ সহজে বুঝতে পারে। কারন, সহজ জিনিস মানুষের কাছে বেশি প্রাধান্য পায়। কঠিন জিনিস সহজে বুঝতে চায় না৷

৭। আপনার লেখাটা রিভিশন করুনঃ

লিখিত লেখাটি পড়ে ভুলত্রুটি শুধরিয়ে উপস্থাপন করাটা লেখকদের জন্য জরুরি। যেকোনো লেখা শেষ করার পর পুনরায় চেক করলে লেখার ভুল-ভ্রান্তি সহজেই ধরা পড়ে। এটা একজন লেখকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এজন্য, লেখাটা শেষ হওয়ার পর পরই অন্তত কয়েকবার পড়ে ফেলুন।

Related Posts

6 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.