অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারে হতে পারে হৃদরোগ!

মোবাইল ফোন ছাড়া আজকের যুগ অচল। একজন সুস্থ স্বাভাবিক ও সামাজিক মানুষের কাছে একটা ফোন থাকবে না এটা ভাবাটাও যেন পাপ। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে একটা মোবাইল ফোন মানেই হলো সাত রাজার ধন। সেই মোবাইল ফোনটি পেলে সে ফিরে পায় তার নিজের জগৎ, মোবাইলেই খুঁজে নেয় তার আনন্দ। মোবাইলই হয় তার অলস সময়ের একমাত্র অবলম্বন। কখনো কখনো এমন দৃশ্যও চোখে পড়ে যে পাশাপাশি ৪/৫জন বন্ধু বসে আছে কিন্তু কারো মুখে কথা নেই, হাসি নেই। প্রত্যেকেই তার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি নিয়ে ব্যস্ত। কারো সাথে কেউ কথা বলার, আড্ডা দেওয়ার সময় নেই। ভয়ের ব্যাপারে হলো এই স্মার্টফোনটাকেই যদি করে নেন সবসময়ের সঙ্গী তবে এই মোবাইল ফোনটি আপনার জীবননাশের কারণ হতে পারে। আপনার যে কোনো সময় হতে পারে হৃদরোগ। হঠাৎ করেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে আপনার। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা যায় যেসব স্কুল,কলেজের ছাত্রছাত্রীরা দিনে ৫ ঘন্টা বা তার বেশি মোবাইলে সময় দেন তার মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি এবং হৃদপি-ে রোগের আশংকাও বেশি। এমনকি দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলতে থাকলে মানুষের শরীরে স্থুলতা, ডায়াবেটিসসহ নানাবিধ জটিল রোগ বাসা বাঁধতে পারে। ডাক্তারদের মতে একজন মানুষ যখন স্মার্টফোনে আসক্ত হয়ে যায় তখন সে দিনে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ ঘন্টা এর পিছনে সময় ব্যয় করে। ফলে মোবাইলের ক্ষতিকর রেডিয়েশন তার ব্রেনের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে। তাছাড়া মোবাইলে আসক্ত ব্যক্তি দীর্ঘক্ষণ মোবাইল অপারেট করার কারণে তার মেরুদ-ে প্রেশার পড়ে। ফলে তার অবসর সময় যখন সে মোবাইল থেকে দূরে থাকে তখন সে শারীরিক দুর্বলতায় ভোগে, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। দক্ষিণ আমেরিকার এক গবেষক তার প্রতিবেদনে বলেন- স্মার্টফোনের সামনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করলে শারীরিক কার্যকলাপের সময় কমে যায়। এর ফলে মৃত্যু ঘটতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের আশংকা বাড়ে। এমনকি দেখে দিতে পারে বিভিন্ন ক্যান্সার। মিরারি ম্যান্টিনা মরণ নামের এই গবেষক প্রায় সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থীর উপর গবেষণা করেছেন। তার গবেষণায় ৭০০ জন পুরুষ ও ৩০০-এর বেশি নারী ছিলেন। তিনি দেখেছেন যারা স্মার্ট ফোনে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করেন তারা দিন দিন স্থুলকায় হয়ে যাচেছন। ধীরে ধীরে তারা স্বাভাবিক কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলছেন।
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে যোগাযোগ থেকে শুরু কর শিক্ষাগ্রহণ, বিনোদন সবকিছুতেই মোবাইলের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু তাই বলে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে স্মার্টফোনের সাথে লেগে থাকা এর কোনো মানে নেই। এতে করে সময় ও অর্থ অপচয়তো আছেই দেহের আরও মারাত্মক কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি আমরা। এর ক্ষতিকর দিকগুলো আমাদের অনুধাবন করতে হবে। কারণে অকারণে ফেসবুক, ইউটিউব , ম্যাসেঞ্জারে অতিরিক্ত সময় দিলে শুধু নিজের ক্ষতিই ডেকে আনা হবে । স্মার্ট ফোন ব্যবহারে আরও সচেতন ও মিতব্যয়ী না হলে অদূর ভবিষ্যতে তরুণ প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের চরম অবনতি ঘটবে। এমন সখের স্মার্টফোনটি হয়ে দাঁড়াবে আপনার জীবনের জন্য হুমকি।

Related Posts

3 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.