ষষ্ঠ সপ্তাহের নবম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এসাইনমেন্ট

আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিয় পাঠক এবং পাঠিকাগণ। কেমন আছেন আপনারা সবাই?আশা করি আপনারা সকলে যে যার অবস্থানে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আপনারা সকলে নিজ নিজ অবস্থানে ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন সেই কামনাই ব্যক্ত ব্যক্ত করি সব সময়।

এসাইনমেন্ট সিরিজের উত্তর প্রদানের আমি নিয়ে এসেছি নবম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়। আশা করি আপনাদের উপকার হবে।

#নবম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ঃ প্রশ্নঃনারীর প্রতি সহিংসতার কারণগুলো বর্ণণা কর।সহিংসতা প্রতিরোধে তোমার পরিবার এবং এলাকার দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিরোধ কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায় আলোচনা কর। যেকোনো একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধর।

উত্তরঃসমাজে নারীর প্রতি সহিংসতার বহু কারণ রয়েছে।আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন কাজে নারী সর্বদা অপারদর্শী অদক্ষ হিসেবে পরিগণিত হয়।বাইরের বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান থেকে বঞ্চিত রাখা, যৌতুক,বাল্যবিবাহ,বহুবিবাহ,ক্রমাগত কন্যা সন্তান জন্ম এর ফলে পুত্র সন্তানের প্রতি আগ্রহাই হয়ে উঠা প্রভৃতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলেছে।

অর্থনৈতিক দুরবস্থা আমাদের দেশে যৌতুক প্রথাকে প্রতিষ্ঠা করতে উৎসাহিত করেছে।ফলে ক্রমাগত যৌতুক প্রথা পরিণত হয়েছে হাতিয়ার রুপে।তাছাড়া নারীকে শিক্ষা থেকে বঞ্চির রাখা,মতলবি ফতোয়া,বিভিন্ন সামাজিক কুপ্রথা প্রভৃতি নারীর,প্রতি সহিংসতার গুরুত্বপূর্ণ কারণ।এখনো আমাদের সমাজে অনেক পুরুষ নারীকে দূর্বল, অবলা মনে করে। গ্রামীন ও শহুরে সমাজে কতিপয় পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি হলো নারীর কাজ গৃহে রান্না – বান্না,সন্তান জন্মদান,লালন পালন,সবজি বাগান করা,গবাদী পশু পালন,শিশুকে পাঠদান ও শারীরিক শুশুষা করা প্রভৃতি। পুরুষতান্ত্রিক অন্যান্য সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি যেমনঃ পুরুষ নারীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ, নারীরা স্বামীর সেবাদাসি,স্বামীর পদতলে স্ত্রীর বেহেশত প্রভৃতি মনোভাব থেকে নারীর প্রতি সহিংসতার সৃষ্টি হয়।আবার ছোটবেলা নিজ পরিবারে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বঞ্চনার পরিবর্তে একজন পুরুষকে সহিংস করে তুলতে পারে।কন্যা সত্নানের প্রতি শিক্ষাদানকে গুরুত্ব না দেওয়া, কন্যা সন্তানের প্রতি মা বাবার উদাসীনতা,পুত্র সন্তানকে প্রাধান্য দেওয়া, বিবাহ কন্যার ইচ্চা অনিচ্ছার উপেক্ষা করার মনোভাব প্রভৃতি নারীর প্রতি সহিংসতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে আরও একধাপ।

নারীর প্রতি সহিংসতার গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো দারিদ্র্য ।দারিদ্য ঘোচাতে এসে,কাজের খুজে অনেক নারী সহিংসতার স্বীকার হয়।অনেক নারী শ্রমিকের বিরাট অংশ পোষাক শিল্পে কাজ করে।এই সকল নারী শ্রমিক রাতের বেলা ফেরার পথে কিংবা শয়নকক্ষ সংকটের কারণে একই ঘরে নারী পুরুষ নির্বিশেষে বসবাস করার কারণে অনেকেই যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়ে থাকে।

লোক লজ্জার ভয়ে, পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদার ভয়সহ নানা কারণে বাংলাদেশের নারী সমাজ অনেক সময় নির্যাতনের বাইরে প্রকাশ করতে পারে বা প্রতিবাদ করতে পারে না।ফলে নারী ও শিশুর এ নীরবতা ভাঙতে শিক্ষা মন্ত্রানলয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়, বিভিন্ন সহযোগী মন্ত্রনালয় যেমনঃআইন শালিশ কেন্দ্র,ব্র‍্যাকিং দ্যা সাইলেন্স বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে।

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এ সমাজের করণিয়ঃ
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।এক্ষেত্রে সমাজের করণিয় কি তা নিচে উল্লেখ করা হলঃ

১.নারী শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহন,বিধবা ভাতা প্রদান,নারীর প্রতি ঋনদান কর্মসূচী গ্রহনের মাধ্যেমে নারীর ক্ষমতা বৃদ্ধি।

২.নির্যাতন, সহিংসতার ধরণ এবং প্রকৃতির সাথে সামাঞ্জস্য রেখে আইন প্রণয়ন এবং এর যথাযথ প্রয়োগ।

৩.পরিবারে ছেলে মেয়ে উভয়কে নৈতিক মূল্যবোধ গঠন সম্পর্কিত শিক্ষা প্রদান।

৪.নারী অধিকার এবং অধিকার বিশয়ক সচেতনতা প্রদান করা।

৫.নারী নির্যাতনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা।

৬.সামাজিক চাপ প্রয়োগ করে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা।

সামনে নতুন কোন টপিক নিয়ে হাজির হব আপনাদের সামনে।ধন্যবাস সবাইকে।
মাস্ক পড়ুন
সুস্থ থাকুন

Related Posts

6 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.