রাজার কবলে রাজাগাঁও! গুণবান রাজু (পর্ব-৩)

২য় পর্বের পর,
রাজু যখনই সিংহটাকে ফাঁদ থেকে মুক্ত করল, তখনই সিংহটা তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। রাজু ভয়ে একেবারে থ হয়ে গেছে। সে মনে করল যে এবার তাকে সিংহটা মেরে ফেলবে। মেরে তাকে দিয়ে পেট পূজা করবে সিংহটা। সে হয়তো আর এই পৃথিবীর কিছুই দেখতে পারবে না। দেখতে পাবে না তার চেনা জানা মুখগুলো। আজকেই তার মৃত্যু অবধারিত। এজন্য শত্রুকে কখনো সাহায্য করতে নেই।

কিন্তু সে যা ভাবল, তার উল্টোটা ঘটলো। সিংহটা তাকে মারল না, বরং; তাকে চেটে চেটে আদর করতে লাগলো। এবার সে বুঝতে পারল, সিংহটা তাকে মারবে না। আদর করবে। কারণ, সে যে সিংহটাকে ফাঁদ থেকে বের করে এনেছে। সে তারপর ওই সিংহটার সাথে ভাব করে নিল। এখন প্রায় সে ওই জঙ্গলের গভীরে যায় সিংহটার সাথে দেখা করতে।

এভাবে বেশ কিছুদিন চলে গেলো। একদিন ওই গ্রামে এক বদমাইশ রাজার সেনাপতিসহ কিছু সেনাদল এলো। তারা রাজার ফরমান জারি করল। ঘোষণা করা হলো এই গ্রাম এখন সিকান্দার রাজার দখলে। তাই ঠিক সময়ে খাজনা দিতে হবে সকলকে। অন্যথায়, তাদের সকলকে শুলে চড়ানো হবে। এই কথা শুনে সবাই খুব ভয় পেয়ে গেলো।
সৈন্যদল চলে গেলো। কেউ কোনো টু শব্দটিও করল না। সকলে খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো।

কি করে তারা খাজনা দিবে? তারা তো নিজেরাই ২ বেলা ঠিকমতো খেতে পারে না। তারা যে খুব গরিব। খাজনা দিতে হলে তো তারা সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে। তাহলে কি করা যায়? কি করলে খাজনা দেওয়া থেকে তারা রেহায় পাবে? কেউ কোনো সমাধান দিতে পারল না। শেষে সকলে রাজুর কাছে সমাধান নেওয়ার জন্য গেলো।
রাজু তখন জঙ্গলে ছিল। রাজার সৈন্যদের আসার ব্যাপারে সে কিছুই জানে না। লোকজন তাকে খুজতে লাগলো। শেষে একজন বলল যে, সে রাজুকে জঙ্গলে যেতে দেখেছে। তাই সবাই জঙ্গলের দিকে রওনা দিলো। রাজু সে সময় গ্রামে ফিরে আসতেছিল। পথেই তার সাথে গ্রামের লোকদের দেখা হয়ে যায়। গ্রামের লোকজন তাকে সব খুলে বলে।

সব কথা শুনার পর, রাজু গভীর চিন্তায় পড়ে গেলো। রাজার সৈন্যদের মোকাবেলা করা তাদের কর্ম নয়। তারা সেটা পারবে না। তাহলে এমন কিছু ভাবতে হবে, যাতে সাপও মরে, কিন্তু লাঠি না ভাঙ্গে। অনেক ভেবেচিন্তে সে একটা বুদ্ধি আঁটল। সে গ্রামের সবাইকে রটিয়ে দিতে বলল যে, এই গ্রামে এক ভয়ানক ভুত বাস করে, যে সবার কাল্লা কেটে নেয়। সবাই বলল, কেন?
রাজু তাদের সব বুঝিয়ে দিলো। কি করে কি করতে হবে? সব তাদের দেখিয়ে দিল।

এদিকে ভুতের রটনাটা রাজার কানে পৌঁছালো। তিনি এর সত্যতা জানার জন্য নিজেই মাসের শেষ তারিখে আসতে চাইলেন। তিনি সবকিছু স্বচক্ষে দেখবেন। তিনি মোটেও ভুতে বিশ্বাস করেন না। গ্রামবাসীদের রটনাকরা ভুত যদি মিথ্যা হয়, তবে সবাইকে তিনি ভয়ানক শাস্তি দেবেন।

রাজার এই গ্রামে আগমন করার খবর গ্রামবাসীদের কাছে পৌঁছে গেলো। সবাই মহাচিন্তায় পড়ে গেলো। কিন্তু রাজুর মাথায় চলছিল অন্য কিছু। সে সবাইকে ডেকে এক জায়গায় করল। তারপর এক দারুণ পরিকল্পনা করা হলো।
এখন শুধু রাজার আগমনের অপেক্ষা!
বাকিটা পরের পর্বে…………….

Related Posts

17 Comments

  1. এখন শুধু রাজার আগমনের অপেক্ষা!
    বাকিটা পরের পর্বে…………….

    বাকি টুকুও পড়বো। ইনশাল্লাহ্!

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.