একজন সফল ফ্রিল্যান্সার ও তার জীবনের প্রধান লক্ষ্য

প্রভুর দেওয়া আমাদের এই ছোট্ট জীবন। আমরা সবাই আমাদের এই জীবনকে ভালোবাসি। এই ভালোবাসার তাগিদে আমাদের ভবিষ্যতে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকার প্রয়োজন। একমাত্র সঠিক লক্ষ্যই মানুষকে পোঁচ্ছে দিতে পারে ভবিষ্যৎ এর সর্বোচ্চ পর্যায়ে। জীবনে সাফল্য অর্জন করতে হলে, একটি লক্ষ্যকে স্থির করে তা বাস্তবায়ন করার জন্যে তৎপর হওয়া উচিৎ। এতে জীবনে সফলতা অর্জন করা সম্ভব।

লক্ষ্যহীন জীবন মানুষহীন বাড়ির মতো। মানুষহীন বাড়ির যেমন কোন মূল্য নেই তেমনি লক্ষ্যহীন জীবনের ও কোন মূল্য নেই। যারা লক্ষ্যহীন, ভবিষ্যৎ জীবন তাদের অন্ধকারে ভরা। লক্ষ্যহীন মানুষ সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। যার জীবনে কোনো লক্ষ্য নেই সে কী তার ভবিষ্যৎকে নিজের মত করে সাজাতে পারবে? না পারবে না। কারণ লক্ষ্যহীন জীবনের কোন কুল-কিনারা নেই ‘ঠিক মাঝিহীন নৈাকার মত’। তাই জীবনের শুরুতে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে নেওয়া উচিৎ।

আমি খুব ছোট বেলা থেকেই সম্ভাবত যখন একটু-একটু বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই আমার ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে ভেবেছি। আমার বয়স ছিল কম। আসেপাশে তাকিয়ে যাই দেখতাম তাতেই রোমাঞ্চিত হতাম। বাবার সাথে বাজারে যাওয়ার পথে যখন দেখতাম রাস্তার পাশে পোশাক পরা কিছু পুলিশ দাড়িয়ে আছে, তখন ভাবতাম আমি বড় হয়ে এমন একজন পুলিশ অফিসার হব। স্কুলের বইতে বিজ্ঞানী নিউটন, গ্যালিলিও ও এরিস্টটল এর আবিষ্কারের গল্প কাহিনী পড়ে ভাবতাম, আমি একদিন বড় বিজ্ঞানী হব। যখন টেলিভিশনের পর্দায় কেও একজন মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে খবর পড়ত ভাবতাম, আমিও একদিন তাদের মত একজন সাংবাদিক হব। বড় হওয়ার সাথে সাথে যখন একটু জ্ঞান-বুদ্ধি বাড়ল, তখন বুঝতে পেরেছি ইচ্ছে করলেই যা কিছু হওয়া যায় না, কালক্রমে সময় সব কিছু বলে দেয়। এইতো দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখা কালীন ফ্রিল্যান্সিং শব্দটির সাথে পরিচিত হই। এ বিষয়ে অনেক ঘাটাঘাটি করা পর বেশ ভাল একটা ধারণা আমার হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি ভাবছি ফ্রিল্যান্সিং করব। পরবর্তীতে আরো বেশি কিছু শেখার পর এই কাজেই মনোনিবেশ করব।

বর্তমানে আমার ভবিষ্যৎ যে পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে; আমার মনে হয় এটিই সঠিক সময় যে আমার ভবিষ্যতের ভিত্তি টিকে মজবুত করে গড়ে তুলি। তাই ভবিষ্যতে আমার পেশা হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংকে বেছে নিয়েছি। বেশিদিন হয়নি আমি ফ্রিল্যান্সিং শব্দটির সাথে পরিচিত হয়েছি। এই অল্প দিনের ভেতরেই আমার এ বিষয়ে বেশ অনেকটা ধারণা হয়েছে। এই কিছু দিনের অভিজ্ঞাতায় আমি বুঝতে পারছি এই পথটা আমার জন্য অতটা সহজ হবে না। কিন্তু আমিও হার মানার পাত্র নই, হার মানা আমার কর্ম নয় কারণ আমি জীবনে হারতে শিখিনি। আমার লক্ষ্যকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য এখন থেকেই আমি শক্ত ভাবে তৈরি হচ্ছি। মার্কেটপ্লেস গুলোর যে সব কাজ আছে তার সব গুলোতো আমার পক্ষে শেখা সম্ভব নয়, তাই এর মধ্যে থেকে হাতে গোনা কিছু কাজ আমি বেছে নিয়েছি। প্রথমে সহজ কাজ গুলো দিয়ে শুরু করব পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সামনে এগোবো।

আমি যাতে মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে নিয়মিত কাজ পায় এবং বায়ারের চাহিদা অনুযায়ী নির্ভুল ও সুন্দর কাজ বায়ারকে উপহার দিতে পারি, এই লক্ষে বিভিন্ন বই ও ইন্টারনেট থেকে নিয়মিত পড়াশোনা করছি। বর্তমানে আমি এ বিষয়ে যত দূরে এগিয়েছি, আমার মনে হয় আমি কাজ শুরু করতে পারি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি অতি শীঘ্রই একটি ভাল মার্কেটপ্লেস দেখে একাউন্ট খুলব, তারপর একাউন্টিকে সুন্দর করে সাজাবো। সহজে করতে পারি এমন কাজ গুলোতে বিড করব। আশা করি প্রথম কাজটি পেতে আমার বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না। যদি একটি কাজ পেয়ে যায়, তবে কাজটি সুন্দর ভাবে তৈরী করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বায়ারের কাছে জমা দিব। আশা করি বায়ার আমাকে একটি ভাল ফিডব্যাক দেবে। এভাবে আস্তে-আস্তে এগোতে থাকব এবং এক পর্যায়ে বড় বড় কাজ করার মাধ্যমে আমার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের একটি মজবুত ভিত্তি স্থাপন করব।

প্রতিটি মানুষের জীবনে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে। তাই আমার ভবিষ্যৎ জীবনের লক্ষ্য হিসাবে ফ্রিল্যান্সিংকে বেছে নিয়েছি। এই কাজে আমি পারদর্শী হবার পরে আমার এলাকার মানুষদের কেও শেখাব। এলাকার বেকার ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই কাজ করার মাধ্যমে সমাজে বেকারত্বের হার কমাবো। নিজে শিখব ও অপরকে শেখাব, এটাই আমার জীবনের লক্ষ্য।

Related Posts

18 Comments

Leave a Reply

⚠️

Ad Blocker Detected

Our website uses advanced technology to provide you with free content. Please disable your Ad Blocker or whitelist our site to continue.